২০১৭: যুদ্ধাপরাধের বিচারে ধীর গতির বছর

বছরজুড়ে বিচারাঙ্গন আলোচনায় থাকলেও বিদায়ী বছরে এক রকম স্থবিরই ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম।

নিজস্ব প্রতিবেদকমেহেদী হাসান পিয়াসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2017, 08:06 AM
Updated : 29 Dec 2017, 09:01 AM

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্তির পর দুই বছরের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসা একমাত্র ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক বছরের মাঝামাঝিতে এসে মারা গেলে স্থবির হয়ে পড়ে বিচারের কার্যক্রম।

টানা তিন মাস ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ স্থবির থাকার পর বছরের শেষ দিকে গত ১১ অক্টোবর বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামকে চেয়ারম্যান করা হলে কাজে ফেরে ট্রাইব্যুনাল। তখন একটি মামলার রায়ও দেওয়া হয়।

এর আগে গত এপ্রিলে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে কিশোরগঞ্জের মোসলেম প্রধানসহ দুই আসামির ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছিলেন ট্রাইব্যুনালের তখনকার চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

বিদায়ী ২০১৭ সালের পুরো সময়ে এই দুটি ছাড়া যুদ্ধাপরাধের আর কোনো রায় আসেনি। সাক্ষ্যগ্রহণ, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, তারিখ নির্ধারণসহ কিছু মামলার সম্পূরক বিচারিক কাজ চলেছে অনিয়মিতভাবে।

সারা বছরের এক রকম নিস্তরঙ্গ ট্রাইব্যুনালে বছর শেষে আলোচিত ঘটনা হয়ে আসে যুদ্ধাপরাধের দায় স্বীকার করে প্রথমবারের কোনো আসামির রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন।

তবে বছরজুড়ে বিচারকাজের স্থবিরতায় আসছে বছরে ট্রাইব্যুনালে মামলাজট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেক্ষেত্রে অকার্যকর করে রাখা দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালটিও কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

আর বিদায়ী বছরে আপিল বিভাগে ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় সেখানেও একই অবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা তাদের। তাই আপিলে ট্রাইব্যুনালের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিশেষ বেঞ্চ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ।

চেয়ারম্যানের মৃত্যু ও ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল অকার্যকর করে শুধু একটি ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ চালু রাখার পর থেকেই বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক এর চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন।

আগে থেকেই ট্রাইব্যুনালে থাকা বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের সঙ্গে ওই সময় যোগ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী।

কিন্তু ১৩ জুলাই বিচারপতি আনোয়ারুল হকের মৃত্যুর পর থেকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদ খালি থাকে টানা তিন মাস। মূলত ওই সময়টাতেই ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ বন্ধ থাকে।

 পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামকে চেয়ারম্যান করে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়

হাই কোর্টের বিচারপতি আমির হোসেন ও পিআরএলে থাকা জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু আহমেদ জমাদারকে ট্রাইব্যুনালের নতুন সদস্য করা হয়।

পুনর্গঠিত এই ট্রাইব্যুনাল ২২ নভেম্বর একটি মামলায় রায়ও ঘোষণা করে; যেটি ২০১৭ সালে ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় ও সর্বশেষ রায়।

ট্রাইব্যুনালের দুই রায়

বিদায়ী বছরে এক রকম স্থবির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে কিশোরগঞ্জের দুইজন ও গাইবান্ধার ঘোরামারা আজিজসহ ছয়জন মিলিয়ে মোট আট যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে।

১৯ এপ্রিল বিচারপতি আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরে কিশোরগঞ্জ এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে তখনকার রাজাকার বাহিনীর সদস্যের ফাঁসির রায় ঘোষণা করে

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির মধ্যে মোসলেম প্রধান গ্রেপ্তারে হয়ে কারাগারে থাকলেও সৈয়দ মো. হুসাইন পলাতক রয়েছে।

রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা ছয় অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আসামিদের সাজা কার্যকর করতে হবে।

ট্রাইব্যুনালের ২৮তম এ রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় বলে সেদিন জানিয়েছিলেন তিন সদস্যের এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

বিচারপতি আনোয়ারুল হকের মৃত্যুর পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গত ২২ নভেম্বর গাইবান্ধার ৬ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে।

সাবেক সাংসদ আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া, (ফাইল ছবি)

একাত্তরে গাইবান্ধা এলাকায় অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার মত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক সাংসদ জামায়াত নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ওই ছয় আসামির ফাঁসির রায় দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা তিন অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আসামিদের সাজা কার্যকর করতে হবে।

আসামিদের মধ্যে আব্দুল আজিজ মিয়া (৬০), মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬৩), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৬০),  মো. নাজমুল হুদা (৬২) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬৪) পলাতক। রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন কেবল মো. আব্দুল লতিফ (৬৩)।

পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে সাজা কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। এই মামলাটিই ২০১৭ সালের সর্বশেষ ও যুদ্ধাপরাধে ২৯তম মামলার রায়।  

যুদ্ধাপরাধের আসামির রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন

বিদায়ী বছরের শেষে এসে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে প্রথমবারের মতো কোনো আসামি ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার আবেদন করে।

হত্যা ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের খলিলুর রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন অন্যতম আসামি আবদুল লতিফ। বছর শেষে ট্রাইব্যুনালে এটিই আলোচিত ঘটনা।

এই আসামির রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদনে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আবেদনের শুনানির জন্য নতুন বছরের ১৭ জানুয়ারি দিন রেখেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় গফরগাঁওয়ের সাধুয়া ও টাঙ্গাব ইউনিয়নের রৌহা গ্রামে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো যুদ্ধাপরাধের সাতটি অভিযোগ এনে ওই ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

মামলায় পলাতকদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির পর গত ২২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন আবদুল লতিফ। ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন আব্দুল লতিফ।

মামলার ১১ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন- মো. খলিলুর রহমান, মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, মো. রইছ উদ্দিন, আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ও আব্দুল লতিফ।

পলাতক পাঁচ আসামি হলেন- এ এস ফয়েজুল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, আলীমুদ্দিন খান, নুরুল আমিন সাজাহান ও সিরাজুল ইসলাম।

নতুন বছরের শঙ্কা ও আশা

নতুন বছরে ট্রাইব্যুনাল ও আপিলে মামলা জটের শঙ্কা থাকলেও তদন্ত সংস্থায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের গঠিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালটি কার্যকর করা হলে বিচার প্রার্থীদের অতৃপ্তি ঘুচার আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদায়ী বছরে যুদ্ধাপরাধের বিচারে তেমন গতি না থাকায় এই সময়ে সামনের মামলাগুলো ভালোমতে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন জানিয়ে সেখানেও আশা দেখছেন প্রসিকিউশন দলের একজন।

ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, বর্তমানে আপিল বিভাগে যুদ্ধাপরাধের ১৯টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

আর আটক অবস্থায় পাঁচ আসামির মৃত্যুর পর ট্রাইব্যুনালে ১৪১ আসামির বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা চলছে। রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে একটি মামলা।

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক

এই বাস্তবতায় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক মনে করেন, বিচার প্রার্থী ও দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনায় নিয়ে যুদ্ধাপরাধের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আদালতের স্বল্পতা এবং ৯২ দিন কোর্ট কার্যকর না থাকার ফলে যেসব মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল, তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হয়নি। আর যে সমস্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে আপিলে পেন্ডিং আছে সেসব মামলার আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় ভিকটিম, অত্যাচারিত, নির্যাতিত বা বিচার প্রার্থদের এক ধরনের অতৃপ্তি আছে।”

এ নিয়ে তদন্ত সংস্থারও এক ধরনের অস্বস্তি আছে জানিয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে আপিলে একটি বিশেষ বেঞ্চ করার দাবি করেন তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “কারণ এই মামলাগুলো হচ্ছে একটি বিশেষ মামলা। এই মামলাই একমাত্র মামলা, যে মামলা সংবিধান দ্বারা গ্যারান্টেড। যা সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ দ্বারা সংবিধিবদ্ধ। যেহেতু এগুলো বিশষ ধরনের মামলা তাই নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অ্যারেঞ্জমেন্ট থাকা উচিৎ।

“সুপ্রিম কোর্ট ইচ্ছা করলে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ বা বোঝাপড়া করে মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার দিলে জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, সে আকাঙ্ক্ষার সঠিক পরিসমাপ্তি হতে পারে।”

বছরজুড়ে আপিলে যুদ্ধাপরাধের কোনো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বছর উল্লেখযোগ্য কোনো যুদ্ধাপরাধীর বিচার না হওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়েছেন।

“আমি চাই যুদ্ধাপরাধের মামলা যেগুলা আপিলে পেন্ডিং আছে, সেগুলো শেষ করতে; শেষ হওয়া উচিত। এবার কার্যতালিকায় ছিল কিন্তু শুনানি হয়নি, আমি চাই দ্রুত শেষ করে ফেলতে।”

এদিকে নতুন বছরে প্রসিকিউশন তদন্ত সংস্থা পূর্ণ জনবল পাবে- এমন প্রত্যাশায় তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, “ট্রাইব্যুনাল-২ কার্যকর করলে সবচেয়ে ভাল হয়। এজন্য আমরা চাই যে, প্রসিকিউশন আরও সক্রিয় ভূমিকা নিক।

“তাছাড়া ট্রাইব্যুনাল এবং তদন্ত সংস্থায় পর্যাপ্ত জনবল আমাদের নেই। জনবল নিয়োগ চাওয়া হয়েছে তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে। আশা করি আগামী বছর আমরা তা পাব। প্রসিকিউশন এবং তদন্ত সংস্থা আগামী বছর থেকে পূর্ণ জনবল নিয়ে কাজ করতে পারবে বলে মনে করি।”

বিদায়ী বছরে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম ধীর হলেও চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের অসুস্থতা ও পরে মৃত্যুর কারণে এটা সঙ্গত কারণেই হয়েছে বলছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। যে কারণে বেঞ্চে নিয়মিত বসতে পারেননি। তারপর উনার মৃত্যুর পর বেঞ্চ গঠন হতে সময় লেগেছে।

“এটা একদিকে যেমন সত্য কথা আরেক দিকে প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থা আমরা কিন্তু অনেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। যেটা এখন রিফ্লেক্ট হচ্ছে। এখন তো প্রায় ৩৯টির মত মামলা পাইপলাইনে। এই মামলাগুলো আমরা গোছাতে পেরেছি।”

নতুন বছরে ট্রাইব্যুনালে মামলাজটের আশঙ্কায় ট্রাইব্যুনাল-২ কার্যকর হলে বিচার কার্যক্রমে গতি পাবে বলে আশা করলেও জনবল সঙ্কট দূর করায়ও গুরুত্ব দেন এই প্রসিকিউটর।

তুরিন বলেন, “গেল বছর জনবলের ক্ষেত্রে সঙ্কট ছিল। এখনও আছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের একইসঙ্গে মামলা তদন্ত করতে হচ্ছে, আবার সাক্ষী বা মামলা সংশ্লিষ্ট নথিপত্র নিয়ে ট্রাইব্যুনালে আসতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল-২ চালু হলেই কেবল মামলা জট কমে যাবে তা না, আমি মনে করি একইসঙ্গে দুই জায়গায় জনবলও বাড়াতে হবে।”