জাতীয় স্মৃতিসৌধে খালেদার শ্রদ্ধা

বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2017, 07:27 AM
Updated : 16 Dec 2017, 10:44 AM

শনিবার বেলা ১১টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার পর পর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন।

জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে স্মৃতিসৌধের মূলবেদীতে পুস্পমাল্য অর্পণের পর খালেদা জিয়া কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা দেড়টায় শেরে বাংলা নগরে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া । প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।

স্মৃতিসৌধ ও জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় তার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, , রুহুল কুদ্দস তালুকদার দুলু, নাজিম উদ্দিন আলম মীর সরফত আলী সপুসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ছিলেন সাইফুল ইসলাম নিবর, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, রাজীব আহসানসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

মহানগর বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী দল, ছাত্রদল, জাসাস, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্র্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালরিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জিয়া পরিষদ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সামাজিক সংগঠন আলাদা আলাদাভাবে জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অপর্ণ করে।

সাভারে যাত্রা পথে ও শেরে বাংলানগরে জিয়া কবরে যাওয়ার সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে পুরো প্রতিবন্ধকতা ছিল, সাভার যাওয়ার পথে ও শেরে বাংলানগরে আসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশনেত্রীর গাড়িবহর আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যাতে সময়মত আসতে না পারি তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।”

এদিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাধীনতার যাত্রায় গণতন্ত্রকে অন্যতম আদর্শ হিসেবে অভিহিত করে তা বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ আনেন বিএনপি নেতা মঈন খান।

তিনি বলেন, “একাত্তর সালে স্বাধীনতার যাত্রা শুরু করেছিলাম দুটি আদর্শ নিয়ে, একটি হচ্ছে গণতন্ত্র; আরেকটি হচ্ছে বাংলাদেশের...  তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থান, তার খেটে খাওয়া মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে আদর্শ, সেই আদর্শ নিয়ে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হয়ে ৪৭ বছরে যাচ্ছি, সেই প্রশ্নগুলো এখন নতুন করে জেগে উঠছে।

“আমরা বিশ্বাস করতাম- পাকিস্তানের যে কাঠামো, সেই কাঠামোতে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়; সেটাই কিন্তু একটা মূল উদ্দেশ্য ছিল। সেজন্যই আমরা অত্যান্ত জোর গলায় বলেছিলাম, আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চাই। অথচ বারবার বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিঘ্নিত হচ্ছে।”

বর্তমান সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নেই মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, “আজকের যে সংসদ, সেই সংসদের দিকে তাকিয়ে দেখুন- তৃণমূলের যে কোনো একজন মানুষকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন, এখানে কেউ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে?

“৩০০ আসনের ১৫৪ জন ভোট ছাড়া নির্বাচিত। বাকি ১৪৬ জন নির্বাচিত হয় শত করা ৫ শতাংশ ভোটে। এ কারণেই কি আমরা বাংলাদেশ চেয়েছিলাম।”

‘সত্যিকার অর্থে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা’ করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আদর্শের প্রতি সত্যনিষ্ঠ থাকা হয় বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

বিজয় দিবস উপলক্ষে ভোরে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের ভবনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।