ঢাবির ‘ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে’ কাজ করবে প্রগতি পরিষদ

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ-উভয়পন্থি শিক্ষকদের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের আমলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির ‘অবক্ষয় হয়েছে’ দাবি করে তা পুনরুদ্ধারে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে প্রগতি পরিষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2017, 07:13 PM
Updated : 15 Dec 2017, 07:13 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সিনেট রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে উপলক্ষে শুক্রবার টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রগতি পরিষদের অন্যতম প্রার্থী অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল মোকাদ্দেম (এম এম আকাশ) এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “পঁচাত্তর পরবর্তী বিগত কয়েক দশক ধরে দেখছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক অথবা বঙ্গবন্ধুর অনুসারী অথবা তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দৃঢ় সমর্থক বলে পরিচিত শিক্ষকদের মধ্যেই মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব চলছে, যা অতি সম্প্রতি অনভিপ্রেত হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গেছে।

“প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এগুলোকে মূল্যবোধের নিদারুণ অবক্ষয়ের লক্ষণ বলেই মনে করি। এ অবস্থার আরও অধোগতি এই মুহূর্তেই থামাতে হবে।”

অধ্যাপক আকাশ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত দুটি দল- সাদা ও নীল উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাবিদার।কিন্তু আমরা জানি যে, উভয় দলের প্রশাসনের আমলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির অবক্ষয় অব্যাহত ছিল।”

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ছাত্রদের কাছ থেকে ডাকসু ফি নিয়েও ডাকসু নির্বাচনের না দেওয়ার নীতিহীন সংস্কৃতি চালু রেখেছে। এই খাতে সংগৃহীত বিপুল অর্থ থেকে যাচ্ছে প্রায় হিসাব বহির্ভূত। অবশেষে এক ছাত্রের অনশনের পর তাদের ঘুম কিছুটা ভেঙেছে।”

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে ধারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত উজ্জ্বল ভাবমুর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা আমাদের অঙ্গীকার।”

প্রগতি পরিষদের পক্ষে আটটি নির্বাচনী অঙ্গীকার ঘোষণা করেন তিনি ।

এগুলো হলো- সুষ্ঠু ও পূর্ণ সিনেট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ’৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী ছাত্রসহ সিনেটের সব প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি, সিনেট নির্বাচনকে অসম্পূর্ণ রেখে মনোনীত উপাচার্য নিয়োগের অগণতান্ত্রিক প্রথা প্রত্যাহার করা, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা, অপ্রয়োজনীয় বিভাগ খুলে সাধ্যের অতিরিক্তি শিক্ষক নিয়োগ ও ছাত্র ভর্তি করে অর্থের অপব্যয় ও শিক্ষিত বেকার সৃষ্টির প্রক্রিয়া বন্ধ করা, গবেষণা ও একাডেমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ব্যয় ব্যাপক পুনর্বিন্যাস করা, সান্ধ্য কোর্স বা বাইরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান বিষয়ে সুচিন্তিত নীতিমালা প্রণয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের আসন বা সিট বরাদ্দে প্রাধ্যক্ষ এবং আবাসিক শিক্ষকদের কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী শিক্ষকদের রাজনীতি করার অধিকারের অপব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতার ক্রীড়নকের পরিণত হওয়ার প্রবণতা রোধ করা।

প্রগতি পরিষদের প্রার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সাবেক সিনেট সদস্য অধ্যাপক কে এ এম সাদউদ্দীন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল মোকাদ্দেম (এম এম আকাশ), সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নেহাল করিম, নটরডেম কলেজের সাবেক অধ্যাপক এ এন রাশেদা, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি অধ্যাপক এফ এম বদিউর রহমান, অধ্যাপক এম এ আজিজ মিয়া, সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুর রহিম খান (রুবেল খান), মুক্তিযোদ্ধা আবু কাওসার মো. মাহবুবাল আলম, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার গোপাল চন্দ্র গুহ রায়, ড. নিতাই কান্তি দাস, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক কোষাধ্যক্ষ বিমল মজুমদার, এড্যাভোকেট মোহাম্মদ আবু তাহের, মো. আমিনুর রহমান, অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলাম ও শান্তনু দে।