ঢাকা দক্ষিণের ১৮ ওয়ার্ডেও একসঙ্গে ভোটের পরিকল্পনা ইসির

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে নতুন যুক্ত হওয়ার ১৮টি ওয়ার্ডের ভোটের পাশাপাশি দক্ষিণেও সম্প্রসারিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট করতে চায় নির্বাচন কমিশন-ইসি।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2017, 06:01 AM
Updated : 15 Dec 2017, 06:01 AM

আগামী রোববার হতে যাওয়া ১৫তম কমিশন সভায় এ সংক্রান্ত ‘এজেন্ডা’ রাখা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ‘ওয়ার্কিং পেপার’ চূড়ান্ত করেছে ইসি সচিবালয়।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠিপত্র এসেছে। উত্তরের এ উপ নির্বাচন নিয়ে ওয়ার্কিং পেপার তৈরি করার নির্দেশনা দিয়েছেন সিইসি । 

“রোববার কমিশন সভা রয়েছে। এতে ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তৈরি করা কার্যপত্র পেয়ে সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”

আলোচ্যসূচির বিষয়ে ইসির উপ-সচিব (সংস্থাপন) মো. শাহেদুন্নবী স্বাক্ষরিত সভার নোটিসে বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের শূন্য পদে নির্বাচন; সেই সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে নতুন গঠিত ওয়ার্ডগুলোয় নির্বাচন।

ইসি সচিবালয় থেকে জানা যায়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যুক্ত নতুন ওয়ার্ডগুলোর সীমানা ইতোমধ্যে পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া এসব ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার হালনাগাদের সব তথ্যও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র যাচাই, ভোটার তালিকা যাচাই প্রতিবেদন পাবে।

গত ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুর পর আইন অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটের মাধ্যমে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ পূরণ করতে হবে ইসিকে।

তবে ২ থেকে ৩১ জানুয়ারি হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনার জন্যে বলেছে ইসি সচিবালয়।

২৮ এপ্রিল ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তরের ভোট হওয়ার পর ১৪ মে প্রথম সভা হয়। সে হিসাবে উপ নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র বাকি মেয়াদের জন্য অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৩ মে পর্যন্ত বহাল থাকবেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রথম সভা হয় ১৭ মে। এ সিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ২০২০ সালের ১৬ মে।

এদিকে ঢাকা উত্তরের মেয়রের শূন্য পদে উপ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্ধিত ওয়ার্ডে নির্বাচনের জন্য অনুরোধের পর ছয়টি বিষয় পর্যালোচনায় জোর দিচ্ছে ইসি।

কমিশন সভায় উপস্থাপনের জন্য ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত কার্যপত্রে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এর মধ্যে উত্তরের মেয়রের শূন্য পদে উপনির্বাচনের বর্তমানের এখতিয়ারাধীন এলাকা, সীমানা ও ওয়ার্ড; শূন্য পদে উপনির্বাচনের জন্য ওয়ার্ড বিভক্তি ও ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস; বিভক্ত ওয়ার্ড ও পুনর্বিন্যস্ত ভোটার তালিকার সিডি প্রাপ্তির সর্বশেষ অবস্থান; উপ নির্বাচনের প্রাক্কালে হালনাগাদ করা খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও নিষ্পত্তি বিষয়ক কার্যক্রমে প্রভাব; দুই সিটির সীমানা বাড়ানোর পর ওয়ার্ড সংখ্যা বৃদ্ধি ও ওয়ার্ড বিভক্তি চূড়ান্তের পর পরিষদের আগের সদস্য ও বর্তমান সদস্য সংখ্যা এবং পরিষদ গঠন বিষয়ক বিধান পর্যালোচনা; দুই সিটিতে সীমানা ও ওয়ার্ড বাড়ায় পরিষদের বা বর্ধিতাংশের কাউন্সিলর পদের মেয়াদ বা নির্বাচনের বিষয় কোনো জটিলতা অথবা আইনগত দিক পরীক্ষা করা।

গত ২৬ জুলাই দুই সিটি করপোরেশনে ৩৬টি ওয়ার্ড বাড়িয়ে সীমানা নির্ধারণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ নতুন ওয়ার্ড গঠনের গেজেট জারি করে।

এরপর ৮ অগাস্ট উত্তরের ১৮টি সাধারণ ও ছয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণের ১৮টি সাধারণ ও ছয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ভোট করতে ইসিকে অনুরোধ জানায়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পুরাতন ৩৬টির সঙ্গে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যোগ হওয়ায় মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪টি। আর দক্ষিণ সিটির ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫টি।