বাকি দুই মামলায় আসামির জামিন প্রশ্নে হাই কোর্টের শুনানি এক মাসের জন্য মুলতবি রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
এর ফলে গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের মুক্তির পথ খুললেও বনানীর ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদারকে দুই মামলায় আপাতত কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
আপন মালিকদের পক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাঁচটি মামলার মধ্যে গুলশান থানায় দুটি মামলা করা হয়েছিল গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে।
“তাদের হাই কোর্ট জামিন দিয়েছে। ফলে এ দুজনের মুক্তিতে বাধা নেই।”
আর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রমনা থানার মামলায় হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও বাকি দুই মামলায় জামিন শুনানি এক মাসের জন্য মুলতবি করায় আপাতত তার মুক্তি মিলছে না।
আপন মালিক তিন ভাইকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে যাবে বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ জানান।
বনানীর একটি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের নামে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গত মে মাসে গ্রেপ্তার হন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদারের ছেলে সাফাত আহমেদ।
বর্তমানে কারাগারে থাকা সাফাতসহ তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই আপন জুয়েলার্সের ‘অবৈধ লেনদেন’ এর খোঁজে তদন্তে নামে শুল্ক গোয়েন্দা।
মে মাসের শেষ দিকে আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শোরুম থেকে ১৫ দশমিক ৩ মণ সোনা এবং ৭ হাজার ৩৬৯ টি হীরার অলঙ্কার জব্দ করে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে গত ১২ আগস্ট আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়।
দুই মামলায় গত ২২ আগস্ট তিন ভাই হাই কোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। এরপর বিচারিক আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় গত ২৩ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
পরদিন আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠায় আদালত। এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে পাঁচ মামলায় জামিন আবেদন করেন আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২২ নভেম্বর আপন জুয়েলার্সের মালিকদের কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছিল হাই কোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি বৃহস্পতিবার আদালতে আসে।