তুরাগ পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ

তুরাগ নদীর তীরে সীমানা পিলার বসানোর পর তার ভেতরে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, সেগুলো উচ্ছেদ করতে গাজীপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2017, 03:59 PM
Updated : 13 Dec 2017, 03:59 PM

এই উচ্ছেদ কাজে সহযোগিতা করার জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, বিআইডব্লিটিএ’র চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট মামলায় সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, মো. আসাদুজ্জামান, মেহেদী হাসানসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।

ঢাকার চার নদী রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) একটি রিট আবেদনে ২০০৯ সালে রুল জারিসহ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেখানে তুরাগ নদীর গাজীপুরের অংশে যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে, সেগুলো উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

সেতুর উপর থেকে দেখা তুরাগ তীর (গুগল স্ট্রিট ভিউ)

মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরবর্তীতে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রতিবেদন দেওয়ার পর আদালতের প্রতীয়মান হয় যে, আরও অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে। তখন আদালত ওই স্থাপনাগুলোর নাম- ঠিকানা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিতে বলে।”

মাস দেড়েক আগে সেই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সে প্রতিবেদনে আরও ৩০টি অবৈধ স্থাপনা আছে উল্লেখ করা হয়। এরপর এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে ওই অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের আবেদন করা হয়।

মনজিল বলেন, “আদালত বলেছে নদীর সীমানা অনুযায়ী সঠিক জায়গায় পিলার বসানোর জন্য এবং পিলারের ভেতরে নদীর দিকে যত স্থাপনা আছে সেগুলো উচ্ছেদ করতে।”

আদালতে ইতোপূর্বে দাখিল করা প্রতিবেদনে নদী দখলকারী হিসেবে ৩০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে।

মনজিল মোরসেদ বলেন, “এ ৩০টি স্থাপনার মধ্যে সাজিদ ওয়াশিং নামের প্রতিষ্ঠানটিকে বাদ রাখা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, প্রতিষ্ঠানটি যে জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে সে জায়গাটি তার সরকারের কাছ থেকে নিলামে কিনে নিয়েছে। তাই আদালত বলেছে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। প্রতিষ্ঠানটি হা মীম গ্রুপের।”

প্রতিবেদনে দখলকারী হিসেবে যাদের এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে, তারা হচ্ছে- এনন টেক্স, ড. ফরাস উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়, কর্ডোড ল্যান্ড ডেভলপার এবং ক্যাপ্টেন জাকির হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, প্রত্যাশা হাউজিং, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, নার্গিস আক্তার এন্ড সালাহ উদ্দিন, মো. জাহাঙ্গীর জিপার ফ্যাক্টরি, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ড্রাইভারস ইউনিয়ন, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজ, ইউনুস মেম্বার, (আনন্দ গ্রুপ) জরিনা টেক্সটাইল, বিশ্ব ইজতেমা, শিল্প সম্পর্কিত শিক্ষায়ন, টঙ্গী নিউ মার্কেট (মসজিদ মার্কেট), শাহ আলম গং, মোসলেম সরকার, মেজবাহ উদ্দিন সরকার, আব্দুল হাই, আবু তাহের, গিয়াস উদ্দিন, ছোবহান শেখ, লুৎফা বেগম, ডলি বেগম, সেলিম শেখ, ফজলু মিয়া, আনোয়ার গ্রুপ, দি মার্চেন্ট লি, এন্ড প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি, টেক্সাটাইল মালিক ইমান আলী।