চাকরি বিধিতে ক্ষমতা বেড়েছে সুপ্রিম কোর্টের: আইনমন্ত্রী

অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা আরও বেড়েছে বলে দাবি করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2017, 11:03 AM
Updated : 30 Jan 2018, 12:18 PM

নানা জটিলতার পর সোমবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার গেজেট প্রকাশের পর বিএনপি প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এর মধ্য দিয়ে বিচারকদের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হল।

তবে আইনমন্ত্রীর দাবি, ‘না বুঝে’ অনেকেই এই বিধিমালার সমালোচনা করছেন।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ঘটনাবহুল পদত্যাগের পর দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার সঙ্গে আলোচনার পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধি চূড়ান্ত করে সরকার।

আইন মন্ত্রণালয় এই বিধিমালা তৈরি করার পর বিচারপতি সিনহা তাতে আপত্তি জানিয়ে ফেরত পাঠিয়েছিলেন। তার সময়কালে আর বিধিমালার বিষয়ে মতৈক্য হয়নি।

গেজেট প্রকাশের পরদিন মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “উচ্চ আদালতের সঙ্গে আলাপ-আলাচনা করেই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমার মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কোথাও ক্ষুণ্ন করা হয়নি, বরং একটু বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “যেখানে রাষ্ট্রপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের মধ্যে ভিন্নতা থাকবে, সেই ভিন্নতা থাকলে সুপ্রিম কোর্টের যে পরামর্শ, সেটা প্রাধান্য পাবে। সেই ক্ষেত্রে আমরা তো সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা খর্ব করি নাই।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেই এখন আওয়ামী লীগ সরকার ‘ভিন্নমত ও ভিন্নপথ’ নিয়ন্ত্রণ করবে।

আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

সমালোচকদের নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “তারা বুঝুক আর না বুঝুক, সমালোচনার জন্য তাদের সমালোচনা করতে হবে। তাদের যে ওয়াইডার পরিকল্পনা ছিল, তা অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন খড়কুটো ধরে তারা সমালোচনা করছেন।”

সমালোচনা গঠনমূলক হলে তা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “কনস্ট্রাকটিভ ক্রিটিসিজম করার জন্য উনাদেরকে পড়াশোনা করতে হবে। সেইজন্য আমি উনাদেরকে বলব, আপনারা সংবিধান দেখেন।”

এই প্রসঙ্গে আনিসুল হক আরও বলেন, “আরেকটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই- উনাদের ইচ্ছামতো, উনারা যে রকম ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে ’৯৬ সাল পর্যন্ত কনস্টিটিউশন নিয়ে ফুটবল খেলেছেন, আমরা এই সেক্রেড কনস্টিটিউশনকে নিয়ে আর ফুটবল দেখতে দেব না।”

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার কারণে এই আচরণ বিধি প্রণয়নে দেরি হওয়ার কথা বলছেন, তিনি কীভাবে বাধা দিয়েছিলেন- সেই প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, “যেসব জিনিস চলে গেছে আমি এগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই না।

“আমরা সংবিধান অনুযায়ী কাজ করব, পরিস্কার কথা। আমার এখন পর্যন্ত মনে হয় না যে সংবিধানের বাইরে আমরা আমরা কোনো কাজ করছি।”

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গিয়েই বিচারপতি সিনহাকে সরকারের বিরাগভাজন হয়ে দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে।