সরকারের ভেতরে ‘দুর্নীতিতে সহায়তাকারীদের’ বিষয়ে সতর্ক করলেন গওহর রিজভী

সরকারের মধ্যে থেকে যারা দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2017, 10:15 AM
Updated : 7 Dec 2017, 11:35 AM

বৃহস্পতিবার ঢাকার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক সংলাপ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অগ্রাধিকার দারিদ্র্য দূর করা। যে দেশে দুর্নীতি থাকে সেই দেশে কখনো দারিদ্র্য দূর হবে না। তাই সরকারে থেকেও যারা দুর্নীতিবাজদের সহায়ক হন, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের ‘প্রধান বাধা’ হিসেবে বর্ণনা করেন গওহর রিজভী।

তিনি বলেন, “যারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বাধা দেয়, তারা নিজেদের স্বার্থ থেকেই তা করে। সরকারের কোনো নির্দেশনা থাকে না।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি টিআইবির ট্রাস্টি এটিএম শামসুল হুদা তার বক্তব্যে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর দুর্নীতির তদন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ার প্রসঙ্গ টানেন।

তিনি বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, ছোট কর্মচারীদের বরখাস্ত করা হয়, কিন্তু হোতাদের কেউ ধরা পড়ে না। আসল লোকজন বাইরে থাকে। উনাকে (আব্দুল হাই বাচ্চু) এতদিন পরে (দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে) ডাকা হল কেন?”

২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে দুদক তদন্ত শুরু করলেও মামলা করার সময় বাচ্চু ও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নাম বাদ দেয়। ফলে দুদকের ওই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণ আসার পর সম্প্রতি বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নেয় দুদক।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে যে কোনো দুর্নীতির হোতাদের খুঁজে বের করা কঠিন হয় মন্তব্য করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা লেন, “ব্যবসা-বাণিজ্যের সবকিছু সরকারের হাতে থাকে। গণমাধ্যমের মালিকরাও বড়লোক। তারাও সরকারকে খেপিয়ে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে চায় না।”

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় কৃতিত্বের জন্য এ অনুষ্ঠানে আটজন সাংবাদিককে পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রিন্ট মিডিয়ায় স্থানীয় ক্যাটাগরিতে দৈনিক পূর্বাচলের খুলনার স্টাফ রিপোর্টার এইচ এম আলাউদ্দিন, জাতীয় ক্যাটাগরিতে সাভারে প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার অরূপ রায়; ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে মাছরাঙা টেলিভিশনের বদরুদ্দোজা বাবু ও ক্যামেরা পারসন হিসেবে একই টেলিভিশনের সিনিয়র ক্যামেরা পারসন মেহেদী হাসান সোহাগ; ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মো. সবুজ মাহমুদ, ক্যামেরা পারসন রাকিবুল হাসান, গোলাম কিবরিয়া, গোলাম কিবরিয়া এবং একই ক্যাটাগরিতে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার (বর্তমানে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে) জাহিদ মামর ইসলাম সাদ ও ক্যামেরা পারসন তানভীর মিজান পুরস্কার পেয়েছেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।