মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কালাচাঁদপুর থেকে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার ঢাকার মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যমে কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
তার ভাষ্য, গ্রেপ্তার হেলাল উদ্দিন (৩০) একজন ভাড়াটে খুনি। তার বন্ধু ইউরোপে পালিয়ে থাকা ছাত্রদলের একজনের নির্দেশেই ব্যবসায়ী সিদ্দিককে হত্যা করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানালেও সেই ছাত্রদল নেতার নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি মনিরুল।
গত ১৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বনানীর ৪ নম্বর সড়কে সিদ্দিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘এমএস মুন্সী ওভারসিজে’ ঢুকে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায় চার মুখোশধারী। এলোপাতাড়ি গুলিতে সিদ্দিক ছাড়াও আরও তিনজন আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান সিদ্দিক।
“ছয়জন ঘটনাস্থলে যায়। চারজন মুন্সী ওভারসিজে প্রবেশ করলেও হেলাল ও আরেকজন বাইরে ছিল।”
হেলাল ছাড়াও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া সাদ্দাম ও পিচ্চি আলামিন নামে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
হত্যাকাণ্ডের কারণ হেলাল জানাতে পারেনি জানিয়ে মনিরুল বলেন, “ইউরোপে পালিয়ে থাকা ওই সন্ত্রাসী হেলালের বন্ধু এবং ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত। তার নির্দেশেই সিদ্দিককে হত্যা করার কথা সে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।”
পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা অস্ত্রের জোগান হেলালই দিয়েছে। তিনি নিজেও ছাত্রদলের মধ্যম সারির নেতা।
তবে ছাত্রদলে হেলালের পদ সম্পর্কে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, “মূলত সে পেশাদার খুনি, তাই ওইভাবে পদ ছিল না। তবে নেতাগিরি করত।”
“তার ভাষ্য, ওই ওভারসিজে কয়েক লাখ টাকা এমনিতেই থাকে বলে তাকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল; তাই টাকার বিষয়টি মুখ্য ছিল না। যেহেতু দুজন বন্ধু আর হেলালসহ খুনিরা পেশাদার খুনি, তাই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।”
হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মনিরুল বলেন, “হেলালকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। তারপর জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য জানা যাবে।”
নিহত সিদ্দিকের সঙ্গে হেলালসহ অন্য খুনিদের আগে থেকে কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান মনিরুল।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সেইদিন ২৫ থেকে ২৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। খুন করার জন্যই সন্ত্রাসীরা এসেছিল, আর ওই প্রতিষ্ঠানে কোনো টাকাও ছিল না।”
হেলাল আরো একাধিক হত্যা মামলার আসামি জানিয়ে মনিরুল বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে পাঁচটি অস্ত্রই হেলালের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর একটি অস্ত্র উদ্ধারের বাকি আছে।”