মোমিন হত্যা: হাই কোর্টের রায় বৃহস্পতিবার

ঢাকার কাফরুলের কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম মোমিন হত্যার আলোচিত মামলাটিতে আপিল ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমতি চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2017, 12:09 PM
Updated : 6 Dec 2017, 12:11 PM

বুধবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায়ের দিন নির্ধারণ করে দেয়।

ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র মোমিন জাসদ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তাকে হত্যার এই মামলাটিতে প্রধান আসামি ছিলেন মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলাম।

বিচারিক আদালতের রায়ে ওসি রফিকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। তবে কারাবন্দি অবস্থায় ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।

ওসি রফিককে ‘রক্ষার জন্য’ পুলিশের নানা তৎপরতার কারণে মামলাটি ছিল আলোচিত।

বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধে ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তর ইব্রাহিমপুরে বাসার সামনে খুন করা হয় মোমিনকে। ওই দিনই তার বাবা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ওসি রফিকসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওসি রফিককে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ মে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এর বিরুদ্ধে বাদি নারাজি আবেদন দিলে পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দেয় আদালত। ডিবিও তদন্ত শেষে ওসি রফিককে বাদ দিয়ে ২০০৮ সালের ২ মার্চ অভিযোগপত্র দেয়।

তাতেও বাদী আপত্তি জানালে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়। ২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর দেওয়া বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওসি রফিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এরপর ওই বছরের ১১ নভেম্বর অভিযোগপত্র গৃহীত হয়; ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এ ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের পর আসামিদের বিচার শুরু হয়।

পরবর্তীতে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ স্থানান্তর করা হয়। এ আদালতে ওসি রফিকের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি। এ আদালতই বিচার শেষে ২০১১ সালের ২০ জুলাই রায় দেয়।

রায়ে ওসি রফিকসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান তাজসহ ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

নিম্ন আদালত থেকে ফাঁসি অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয় হাই কোর্টে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরা আপিল করেন। এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর ১২ নভেম্বর হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়।

ওসি রফিক মারা যাওয়ায় মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এখন হলেন সাখাওয়াত হোসেন জুয়েল ও তারেক ওরফে জিয়া।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, হাবিবুর রহমান তাজ, জাফর আহমেদ, মনির হাওলাদার, ঠোঁট উঁচা বাবু, আসিফুল হক জনি ও শরিফ উদ্দিন।

হাই কোর্টে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ ও নির্মল কুমার দাস। 

আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এ কে এম তৌহিদুর এবং রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী শফিকুর রহমান কাজল।

বশির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ দিন শুনানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার জন্য রেখেছে আদালত।”