আগামী ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় তাদেরকে আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ওইদিন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সালাহ উদ্দিন শরীফকেও আদালতে থাকতে বলা হয়েছে।
এক রিটের আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেয়।
সোমবার লক্ষ্মীপুর ডিসি কলোনির ভেতরে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কাকলি শিশু অঙ্গন বিদ্যালয়ে প্রবেশকে কেন্দ্র করে সালাহ উদ্দিন শরীফ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. নূরুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সালাহ উদ্দিন শরীফকে ‘অসদাচরণের দায়ে’ তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
সালাহ উদ্দিন শরীফকে মঙ্গলবার পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন দেন লক্ষ্মীপুর জেলা হাকিম আদালতের বিচারক মীর শওকত হোসেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরের ঘটনার ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী এবং আশফাকুর রহমান মঙ্গলবার সকালে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন।
তাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
দুই কর্মকর্তাকে তলবের পাশাপাশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমের অপব্যবহার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে আদালত।
আইন সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিভিল সার্জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তবে কতদিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হবে তা বলা হয়নি আদেশে।
পরে আইনজীবী আজিম সাংবাদিকদের বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এবং আইনের শাসন সমুন্নত রাখার জন্যই রিট আবেদনটি করেছেন।
“আগামী ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়ে তাদেরকে কার্যক্রমের ব্যাখ্যা দিতে হবে। সেই সঙ্গে ঘটনা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রও তাদের সঙ্গে আনতে বলেছে আদালত। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সাবেক সিভিল সার্জনকেও সেদিন আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। চাইলে আদালতে তিনি তার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।
আর যেসব পত্র-পত্রিকায় এ খবর এসেছে এর সত্যতার জন্য প্রকাশিত খবর হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজিম বলেন, “ভ্রাম্যমাণ আদালতের যে ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অপব্যবহার করে একজন সাবেক সিভিল সার্জনকে অপদস্ত করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আইনের শাসনের চরম ব্যত্যয়।
এটা একজন সিভিল সার্জনের বেলায় যদি ঘটতে পারে তাহলে একজন সাধারণ মানুষের বেলায় কি ঘটতে পারে তা কল্পনাতীত।
“সে জন্য আমরা বলেছি, আইনের শাসনে দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য হলেও তাদের এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে কিসের ভিত্তিতে এবং কোন আইনের ভিত্তিতে তারা এ ধরনের কার্যক্রম করেছেন।”