
রোহিঙ্গা সঙ্কট: কম্বোডিয়াকে পাশে চায় বাংলাদেশ
রিয়াজুল বাশার, নম পেন থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2017-12-04 12:02:05.0 BdST Updated: 2017-12-04 23:28:38.0 BdST
মিয়ানমারের রাখাইনে দমন-পীড়নের কারণে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে কম্বোডিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন আশা করছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একসঙ্গে কাজ করে সহজেই রোহিঙ্গাদের তাদের আবাসভূমিতে ফেরত পাঠাতে পারবে।
সোমবার নম পেনে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতার এ বক্তব্য আসে।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সাম্প্রতিক কিছু আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে দুই পক্ষের আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথা বলেছে।
“আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েও কথা বলেছি, যা আমাদের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শঅন্তি বিনষ্টের হুমকি তৈরি করছে।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশকে এখন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বইতে হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রায় ছয় লাখ ৩০ হাজার মানুষ মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
“রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে তাদের ঘরে ফিরতে পারে, সেজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের কাছেও আমি সহযোগিতা চাইছি, যাতে এ সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারি।”

সেনা সদস্যরা সেখানে কীভাবে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, লুটপাট-জ্বালাও পোড়াও চলছে সেই বিবরণ উঠে আসছে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কথায়।
কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় গড়ে ওঠা অস্থায়ী ক্যাম্পে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে জরুরি খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে হিমশিম খাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
এই দফায় নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির সরকারের সঙ্গে গত ২৩ নভেম্বর একটি সম্মতিপত্রে সই করেছে বাংলাদেশ।
ওই দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং এজন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে সম্মতিপত্রে।
দ্বিপক্ষীয় এই আলোচনার পাশাপাশি সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক সমর্থন আদায়ে কাজ করে আসছে বাংলাদেশ সরকার। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


“আমরা আশা করি, শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার নির্বিঘ্নে একসঙ্গে কাজ করে যেতে পারবে।”
দুই নেতার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
শহীদুল হক বলেন, “মিয়ানমার বোধহয় সবাইকে বুঝিয়েছে যে, বাংলাদেশে ছয় লাখের মত রোহিঙ্গা আছে। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আজকে বলেছেন মিলিয়ন। এটা একটা বড় বেনিফিট।
“তিনি বলেছেন, এটা বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা এবং এটা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে হবে।”
আশিয়ানভুক্ত বৌদ্ধপ্রধান একটি দেশের সরকার প্রধানের কাছ থেকে এ ধরনের বিবৃতিকে ‘বড় বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন পররাষ্ট্র সচিব।


তিনি বলেন, বিভিন্ন ফোরামে দুই দেশই শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের পক্ষে একযোগে কথা বলে। গণহত্যার মত বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা দুই দেশের মানুষেরই হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কম্বোডিয়ার সংঘাত-পরবর্তী শান্তি প্রতিষ্ঠায় এদেশের জনগণের পাশে শুরুতেই এগিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। বাঙালি ও খেমার জাতির মধ্যে প্রাচীন সাংস্কৃতিক সংযোগও রয়েছে।
এই সফরের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ-কম্বোডিয়া সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনের দিনগুলোতে একসঙ্গে কাজ করে দুই দশেকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফরের মধ্য দিয়ে দুদেশের সম্পর্ক আবারও গতিময় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
হুন সেন জানান, শেখ হাসিনা তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।

পরে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্তে এবং দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দেই দেশের মধ্যে নয়টি সমঝোতা ও একটি চুক্তি হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর শেখ হাসিনা ও হুন সেন যৌথ বিবৃতি দেন।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।
আরও পড়ুন
WARNING:
Any unauthorised use or reproduction of bdnews24.com content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
- কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ী আব্দুল করিমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
- অটিস্টিক শিশুর দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকেই: গণশিক্ষামন্ত্রী
- সুফিয়া কামাল হল প্রাধ্যক্ষের অপসারণ চায় ছাত্র অধিকার পরিষদ
- গভীর রাতে হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেওয়া কলঙ্কজনক: বিএনপি
- কবি বেলাল চৌধুরী লাইফ সাপোর্টে
- এমপিদের সুযোগ দেওয়া হবে সংবিধান পরিপন্থি: বিএনপি
- যাত্রাবাড়ীতে ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
- ‘অপতথ্য’ ছড়ানোয় ৩ ছাত্রীকে হলছাড়া: ঢাবি উপাচার্য
- প্রার্থীর ব্যয়ে চোখ রাখতে ইসির কমিটি
- আ. লীগের চাপে নয়, বাস্তবতা বিবেচনায় বিধি সংশোধন: ইসি সচিব
সর্বাধিক পঠিত
- কথা রাখলেন অনন্ত জলিল
- বোলিংয়ে বিবর্ণ সাকিব, গেইলের সেঞ্চুরি
- পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা রনির পদত্যাগ
- নেইমারের চোখে বিশ্বকাপের মঞ্চে আলো কাড়বেন যারা
- আতলেতিকোর হারে শিরোপার আরও কাছে বার্সা
- তেলেঙ্গানায় বটবৃক্ষ বাঁচাতে ডালে ডালে ‘স্যালাইন বোতল’
- আফগানিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজ হবে টি-টোয়েন্টির
- সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ
- বিয়ের আগে অতীত শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে কি জানানো উচিত?
- ‘ঠাগস অব হিন্দোস্তান’ চীনে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা
- মেসিকে আঘাত না করে থামানোর রাস্তা খুঁজছেন মের্কাদো
- খালেদার অবস্থা ‘প্রচণ্ড খারাপ’, স্বজনরাও সাক্ষাৎ পাননি
- বিপিএলে এবার একাদশে সর্বোচ্চ ৪ বিদেশি
- পাওয়া গেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে
- টাইমের প্রভাবশালীদের তালিকায় শেখ হাসিনা