‘জুনের আগেই খুলছে’ বাড্ডার ইউলুপ

আগামী বছরের জুনের মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে মেরুল বাড্ডায় নির্মাণাধীন ইউলুপটি খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

ওবায়দুর মাসুমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 06:43 AM
Updated : 24 Nov 2017, 09:35 AM

হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে রামপুরা ও বাড্ডা প্রান্তে দুটি ইউলুপ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যার মধ্যে রামপুরা অংশের ইউলুপটি গত বছরের ২৫ জুন চালু হয়েছে।

আর প্রগতি সরণির মেরুল বাড্ডা এলাকায় চলছে দ্বিতীয় ইউলুপের নির্মাণ কাজ।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এই হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন। নির্মাণকাজের দায়িত্বে আছে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের বাড্ডা ইউলুপের এখন পর্যন্ত ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান বাস্তবায়নকারী পক্ষে হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা টার্গেট রেখেছি সামনের জুনের মধ্যে শেষ করব। এটা আমাদের লাস্ট টার্গেট। তবে তার আগেই এর নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।

“স্টিল ফেব্রিকেশনের কাজগুলো সেট করেছি। এখন গার্ডারগুলো ওয়েল্ডিং করে জোড়া লাগানো হবে। এরপর কংক্রিটের স্ল্যাব বসানোর কাজগুলো করা বাকি আছে। সেটার জন্য আমরা প্ল্যান করছি।”

“এছাড়া ইউলুপে ওঠার জন্য আপ র‍্যাম্প এবং ডাউন র‍্যাম্পের বেশিরভাগ কাজও শেষ,” বলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ।

বৃহস্পতিবার মেরুল বাড্ডায় ইউলুপ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইউলুপের পায়ারের ওপর স্টিল বক্স গার্ডার বসানোর কাজ হচ্ছে। ইউলুপে ওঠানামার সড়কে (র‍্যাম্প) মাটি ফেলা হচ্ছে। ইউলুপের নিচের সড়কেরও উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ বলেন, স্টিল বক্স গার্ডার পদ্ধতিতে ইউলুপটি করায় নিচের সড়কে যান চলাচল তেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না।

“এভাবে করার কারণে রাস্তাটি কখনও বন্ধ থাকেনি, এর জন্য কাজও থেমে থাকেনি। নিচের সড়কে যানবাহন এবং লোক চলাচল একই রকম রাখা হয়েছে। বক্স গার্ডারগুলো বানিয়ে ক্রেনে করে এখানে এনে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা করা হয়েছে মানুষের দুর্ভোগ যেন না হয়।”

রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, রামপুরায় ইউলুপ নির্মাণের পর যানজট নিরসনে বেশ সাফল্য পাওয়া গেছে। বাড্ডার ইউলুপ চালু হলে যানজটের কোনো রকম দুর্ভোগ ছাড়াই ওই পথের যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন।

এর আগে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাড্ডার ইউলুপটি গত বছরের ডিসেম্বরে চালু হতে পারে কথা জানিয়েছিলেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

তবে ইউলুপের মূল সড়কের ভূগর্ভস্থ অংশে ডেসকোর বিদ্যুতের তার ও বিটিসিএলের টেলিফোনের লাইনের তার এবং তিতাস ও ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবা-সংস্থার গ্যাস-পানির লাইন ছিল। সেগুলো সরাতে সময় বেশি লেগেছে।

এছাড়া ইউলুপের ডাইভারশন সড়ক নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মামলা থাকায়ও কাজ শেষ হতে দেরি হয়েছে।

এবার নির্ধারিত সময়ে ইউলুপ চালু হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী রাজউকের প্রকল্প পরিচালক (হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প) জামাল আখতার ভূঁইয়া।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী মার্চে এই ইউলুপের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

“আমাদের (হাতিরঝিল) প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। এ প্রকল্পের কিছু কাজ বাকি থাকায় সময় বাড়ানো হয়েছিল। তবে এর আগেই হয়ত শেষ হয়ে যাবে। শেষ হলে যে কোনো এক সময় এটা উদ্বোধন করা হবে।”

২০০৭ সালে শুরু হওয়া হাতিরঝিল প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।

প্রথম তিন দফায় মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয় বাড়লেও সর্বশেষ দুই দফায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়েনি।

মেরুল বাড্ডা অংশের ইউলুপ নির্মাণসহ হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের বেশ কিছু কাজ এখনো বাকি। এর মধ্যে নিকেতন অংশে হাতিরঝিল ব্যবস্থাপনা ভবনের নির্মাণকাজ এখনও চলছে। এবার নির্ধারিত সময়েই সব কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।