প্রশ্ন ফাঁস: সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি দাবি

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2017, 03:03 PM
Updated : 23 Nov 2017, 03:03 PM

সর্বস্তরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের বিষয়ে এ বিবৃতি দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় পার্টির বাবলু বলেন, “প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রত্যেকটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।”

এবারের জেএসসিতে প্রায় প্রতিটির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ। ইন্টারনেটে আসা কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার মূল প্রশ্নপত্রের মিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকও পেয়েছে। সবশেষ চলমান প্রাথমিক সমাপনীর প্রশ্ন ফাঁসের খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।

প্রশ্ন ফাঁসের জন্য শিক্ষামন্ত্রী সংসদে শিক্ষকদের দায়ী করেছেন।

আগে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় আগের রাতে প্রশ্নপত্র মিললেও এবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরীক্ষা শুরুর এক থেকে আধা ঘণ্টা আগে তা ফাঁস হয়।

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের উদ্বৃতি দিয়ে বাবলু বলেন, “পত্রিকায় এসেছে প্রশ্ন ফাঁসের বাজার বাংলাদেশ। শিক্ষার সর্বস্তরে পরীক্ষা ফাঁস। শিক্ষা বাণিজ্যে পরিণত হওয়ার জনই এই প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। কোচিং চলছে, প্রাইভেট টিউশনি চলছে। আগামী প্রজন্মের এই ভবিষ্যত যদি সুশিক্ষিত না হয়, তারা যদি নিজেরা নিজেকে তৈরি না করে তাহলে তাদের কাছে আমরা কী প্রত্যাশা করতে পারি? একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র যদি নকল শেখে, তার গার্ডিয়ানরা যদি প্রশ্ন ফাঁস করে তার হাতে তুলে দেয়, তাহলে তার থেকে আমরা কী আশা করতে পারি?”

প্রাথমিক স্তরের সমাপনী পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষাবিদের বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, “শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, পরীক্ষার প্রয়োজন নেই প্রাথমিক পর্যায়ে। প্রফেসর ইমেরিটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন পরীক্ষার আধিক্যই এই প্রশ্ন ফাঁসের উৎস। ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, ফাঁস প্রশ্নের ডাক্তারের রোগী মরণাপন্ন- এই হচ্ছে দেশের অবস্থা। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই, পরিত্রাণ চাই।”

প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রী বাবলু বলেন, “একদিকে প্রযুক্তি আমাদের সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রযুক্তি আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।  প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। পরীক্ষার একঘণ্টা আগে শিক্ষকরা প্রশ্নের ছবি তুলে তা বাইরে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে আবার উত্তর চলে আসে ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলি প্রযুক্তির এই খারাপ জিনিসটা শিখছে। যারা এই প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে তাদের কাছে আমরা কী আশা করতে পারি। এর সুরাহা না করলে আগামী দিনে আমাদেরই পস্তাতে হবে।”

পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, উপজলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা মাসের ১৫ দিন জেলা সদরে থাকেন। প্রশিক্ষণ ও বার্ষিক সভাসহ নানা কর্মসূচির কথা বলে তারা এভাবে কর্মস্থল ছেড়ে জেলা সদরে থাকেন। এর ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ছে।