গুলিতে নিহত দুই যুবকের মা চান শান্তিতে থাকতে

ঢাকার শ্যামপুরে গোলাগুলিতে ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেল্লাল ও ইমরানের মা দুই সন্তান হারিয়ে এখন বাকি জীবন শান্তিতে বসবাস করতে চান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2017, 02:51 PM
Updated : 23 Nov 2017, 02:51 PM

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) মাসুমা বেগম সংবাদ সম্মেলনে এসে কান্নাভরা কণ্ঠে নিজের দুর্দশার কথা বলেন।

গত ২ নভেম্বর জুরাইন ওয়াসা পুকুর পাড়ে গোলাগুলিতে নিহত হন বেল্লাল; তার আগে ৪ অগাস্ট র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যু ঘটে ইমরানের।

তাদের মৃত্যুর পেছনে শ্যামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন মাসুমা। 

তিনি বলেন, “লুৎফর রহমানের মনমতো সাক্ষী না দেওয়ায় আমার দুই সন্তানকে হারাতে হয়েছে। আমার স্বামীও এখন জেলখানায়।

“আমার বড় ছেলে ইমাম হোসেন ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, আর মেয়ে লিপি ও তার স্বামী জাহাঙ্গীরও পালিয়ে বেড়াচ্ছে।”

“এখন তো দুই সন্তানকে হারালাম। বাকি জীবনটুকু ৭০ বছর বয়সী স্বামী ও বড় ছেলে ইমাম ও মেয়েকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই,” বলেন এই নারী।

মাসুমার অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালী লুৎফর রহমানের সহযোগী খালেক ও মালেক তার জীবনের এই দুর্দশার জন্য দায়ী।

কোন ঘটনা থেকে- সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “১৯৯০ সালের আগে লুৎফর রহমানের লোকজন বাচ্চু নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করে। আমার স্বামী তখন একটি কারখানায় কাজ করত। আমার স্বামী ঘটনাটি দেখেন। লুৎফর রহমান তার কথামতো সাক্ষ্য দিতে বলেছিল, কিন্তু আমার স্বামী যা সত্য তা আদালতে বলেন। সেই কারণে আজ দুই সন্তানকে হারাতে হয়েছে।”

প্রভাবশালীদের হাত থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি।

পুলিশ ও র‌্যাব আপনার দুই সন্তানকে এলাকার ‘মাদক সম্রাট’ বলছে- বিষয়টি তুলে ধরা হলে মাসুমা বলেন, “আমার দুই সন্তান যদি মাদক সম্রাট হয়, তাহলে তাদের সম্পদ কোথায়? আমার যে তিনটি বাড়ি আছে, তা সন্তানরা ছোট থাকার সময়ই হয়েছে। ২০/২৫ টি গরু পালন করে এগুলো করেছি।”

ইমরান মোটর মেকানিক এবং বেল্লাল গ্যাস কাটার মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান তিনি।

তবে ডিএমপির ওয়ারি বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তারেক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে  বলেন, “বেল্লাল একজন পেশাদার ডাকাত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদক বিক্রিসহ নানা অভিযোগে প্রচুর মামলা রয়েছে। ইমরানের বিরুদ্ধেও মাদকের অনেক মামলা রয়েছে।”

তারা বহুবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা তারেক।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “র‌্যাব যখন কোনো অভিযান চালায়। যথেষ্ট গোয়েন্দা তথ্য প্রমাণ নিয়েই পরিচালনা করে থাকে।”