বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি দেয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
এর আগে গত বুধবার প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে করে আট দফা দাবি আদায়ে শ্রমিক সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি পেশ এবং বিআরটিএ কার্যালয়ে ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে তারা।
“মালিকরা যে বৈঠকে ৬০০ টাকার জমা ৯০০ টাকা করেছে, সেখানে চালকদের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। মালিকরাই চালকদের পোশাক করে তাদের দাবি আদায় করে নিয়েছিল। এখন তারা অতিরিক্ত জমা নিচ্ছে, তাও দৈনিক দুই বেলা গাড়ির জমা দিতে হয়।”
রাজধানীতে চলাচলকারী প্রাইভেট অটোরিকশা এবং অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বেআইনিভাবে চলাচল করছে বলে অভিযোগ করেন অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম।
“শুধু ঢাকায়ই চার হাজার প্রাইভেট কার অবৈধভাবে যাত্রীবহন করছে। এছাড়া মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশা দিয়েও যাত্রীবহন করা হচ্ছে। কোন আইনে তারা যাত্রী বহন করে, কারা তাদের শেল্টার দিচ্ছে?”
মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন ঐক্যপরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক চৌধুরী।
বুধবার সকালেও একটি অটোরিকশা দুর্ঘটনায় পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ সকালে শ্যামলী শিশুমেলার সামনে অটোরিকশার সামনের চাকা খুলে পড়েছে। এতে চালক এবং যাত্রীরা আহত হয়েছেন। আমরা এসব ঝুঁকিপূর্ণ অটোরিকশা চালাতে চাই না।”
ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরে ২৬ হাজার অটোরিকশা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে সমাবেশে জানান ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শাখাওয়াত হোসেন দুলাল।
“আমাদের চালকদের নানা কারণে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। কিন্তু সেসব গাড়ি চলাচল করে কিভাবে। সবাইকে নীতিমালার আওতায় আনা হোক। প্রয়োজনে আমরাও অ্যাপের মাধ্যমে সেবা দেব।”
চালকদের দাবিগুলো দ্রুত মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সাখাওয়াত হোসেন দুলাল।
সম্মেলেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ নাজমুল হক প্রধান। চালকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এই সদস্য।
“আমি তাদের সবগুলো দাবির সঙ্গে একমত। সংসদীয় কমিটির গত বৈঠকে আমি জানতে চেয়েছিলাম, চালকদের নামে ৯ হাজার অটোরিকশা কেন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। আগামী ৩ তারিখের পরবর্তী বৈঠকেও আমি বিষয়টি তুলব। উত্তর না পেলে আমিও আপনাদের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হব।”
সমাবেশে শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন চালকরা। পরে ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে স্মারকলিপি নিয়ে যান।