সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী করতে যা যা দরকার, করব: প্রধানমন্ত্রী

সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2017, 02:50 PM
Updated : 21 Nov 2017, 03:32 PM

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হয়। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করে যাচ্ছে।

“আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্রশস্ত্র, শিক্ষা দীক্ষা-সব কিছু আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা আর সেই সাথে সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে যা যা প্রয়োজন, আমরা তা করব।”

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সশস্ত্র বাহিনী আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি জনগণের কল্যাণে কাজ করতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী সেনাকুঞ্জে গিয়ে পৌঁছালে তিন বাহিনী প্রধান তাকে স্বাগত জানান। জাতীয় সংগীতের পর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি।

স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান, বাংলাদেশে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী-সংগঠক, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা সস্ত্রীক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে উপস্থিত সবার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সেনাকুঞ্জের সামনের আঙিনায় এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেনাকুঞ্জের মূল মিলনায়তনের ছাদে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল আকৃতির ছবি সংবলিত ব্যানার রাখা হয়। অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশ মুখে স্থাপিত মঞ্চে তিন বাহিনীর বাদক দল বাদ্যযন্ত্রে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানের সুর তোলেন।

অনুষ্ঠানে বড় বড় এলইডি পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দেখানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ত্বরান্বিত করতে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সূচনা করে। আত্মপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর।

স্বাধীনতা উত্তরকালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

“এই ভাষণ অনন্য মর্যাদা অর্জন করেছে, আর জাতিকে উজ্জীবিত করেছে।”

জাতীয় সংগীতের পর প্রধানমন্ত্রীর সেনাকুঞ্জ ত্যাগ করার মধ্য দিয়ে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ হয়।