উন্নয়নের ‘জন্মযন্ত্রণা’ সইতে হবে: ওবায়দুল কাদের

উন্নয়ন কাজ চলার সময় সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নিতে জনগণের প্রতি অনুরোধ রেখেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2017, 02:19 PM
Updated : 21 Nov 2017, 02:19 PM

মহাসড়কে দুর্ভোগ নিয়ে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সাময়িক সমস্যাকে ‘জন্মযন্ত্রণা’ আখ্যায়িত করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “মাননীয় সংসদ সদস্য দুর্ভোগের কবলে আছেন। জন্মকালের যন্ত্রণাটা কেউ কি অস্বীকার করতে পারবেন “

সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় মহাসড়কে চার লেইনের কাজ চলার কারণে যানজটের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেছিলেন।

তার প্রশ্ন ছিল, “যানজট হলে বগুড়া থেকে ঢাকায় আসতে ১৬ ঘণ্টা আর অন্য সময়ে অনন্ত ৮ ঘণ্টা লাগে। এলেঙ্গায় চার লেইনের কাজ ধীরগতিতে এগুচ্ছে, কাজ কতদিনে শেষ হবে আর দুর্ভোগ কতদিনে দূর হবে?”

এর উত্তর দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের ঢাকায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের পর এখন তার সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।  

“মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নিয়ে মানুষের কত দুর্ভোগ! কত কষ্ট! আড়াই ঘণ্টার জায়গায় এখন আড়াই মিনিট লাগছে।”

সড়কে উন্নয়ন কাজের সময় এই দুর্ভোগের কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আসে নগরবাসীর কাছ থেকে

 

জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলামের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “ধৈর্য ধরতে হবে। একটা বড় রাস্তা করা হচ্ছে। আপনারাও ক্ষমতায় ছিলেন, করেননি। প্রশস্ত রাস্তা করা হচ্ছে।

“চার লেইন করার একটা যন্ত্রণা আছে, জন্মযন্ত্রণা। আমাদের এটা মেনে নেওয়া উচিৎ। বাস্তবতা বুঝতে হবে। রাস্তা করতে একটু সময় লাগে। চিন্তা করতে হবে এবার এক বছরের মধ্যে ৯ মাস বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে কি কাজ করা যায়? ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন, সময়মতো শেষ হবে।”

এদিকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সংসদে জানিয়েছেন, দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে।

রেললাইনবিহীন পটুয়াখালীর সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা জানান।

মুজিবুল বলেন, ৪৪টি জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত। রেলওয়েকে আধুনিক, যুগোপযোগী, নিরাপদ ও সেবমুলক গণপরিবহন হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবশিষ্ট জেলাগুলোকে রেলওয়ের নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

“রেলওয়ের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২০২২ সাল নাগাদ মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, নড়াইল, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল, বান্দরবান ও কক্সবাজার নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।

২০৩০ সালের মধ্যে শেরপুর, ঝালকাঠি, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও মাগুরা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা জানান তিনি।

পদ্মা সেতু

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৪৮ শতাংশ ভৌত কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান

“অক্টোবর পর্যন্ত এ সেতুর উল্লেখযোগ্য প্যাকেজসমুহের ভৌত অগ্রগতির মধ্যে মূল সেতু নির্মাণ ৫১ শতাংশ, নদী শাসন ৩৪ দশমিক ২০ শতাংশ, জাজিরা সংযোগ সড়ক ৯৯ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং মাওয়া সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।”

খুব শিগগিরই সেতুর আরও দুটি স্প্যান বসানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তৃতীয় স্প্যানটি বসানোর পর ৭/১০ দিনের ব্যবধানে একটি করে স্প্যান বসতে থাকবে। এভাবে ৪১টি স্প্যান বসানো হবে।”

পদ্মা সেতুর রেলওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি বলেন, ঋণচুক্তি সম্পাদনের পর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।