প্রশাসনের কাছে দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আহসান রাব্বী খান মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রাব্বী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার আমাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, তাই আমরা ক্লাসে ফিরে যাচ্ছি।
“আমরা শনিবার থেকে ক্লাসে ফিরে যাচ্ছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমেও আমরা অংশ নেব।”
যে ঘটনা নিয়ে এই ক্লাস বর্জনের সূত্রপাত, সে বিষয়ে বুয়েটের অবস্থান জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলেও এই শিক্ষার্থী জানান।
শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক সত্য প্রসাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের পলাশী ও বকশীবাজার প্রান্তে সড়কে দুটি ফটক বসানোর দাবি জানিয়েছিল, তা বাস্তবায়নে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পুরো ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান তুলে ধরে গণমাধ্যমেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের আরেক মুখপাত্র যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পার্থ প্রতিম দাস।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে আমরা ক্লাসে ফিরে যাচ্ছি। তবে আন্দোলন এখানেই শেষ নয়।
“আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাব।”
ক্যাম্পাস থেকে ‘বহিরাগত তাড়ানোর অভিযানের’ মধ্যে গত ২৬ ও ২৭ অক্টোবর বুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। তাতে আহত হন বুয়েটের পাঁচ ছাত্র।
ঘটনার পরপরই বুয়েট স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা কর্মচারীর ছেলে রাজুসহ কয়েকজনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করা হয় বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এরপর দোষীদের বিচারসহ আট দফা দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও ল্যাব বর্জন শুরু করে বুয়েট শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ-সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ার পর বুয়েট প্রশাসনকে স্মারকলিপিও দেয় তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েট প্রশাসন যেমন ঘটনার তদন্ত শুরু করে, তেমনি ঘটনাটি আলোচনায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পক্ষ থেকেও তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের সঙ্গে পাশাপাশি থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য একটি ‘কমন নিরাপত্তা বলয়’ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী।