হাসপাতালে লাশ আটকে রাখা যাবে না: হাই কোর্ট

চিকিৎসার খরচ বা হাসপাতালের বিল পরিশোধে অক্ষম কোনো রোগীর লাশ আটকে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2017, 09:28 AM
Updated : 20 Nov 2017, 10:41 AM

দরিদ্র ও দুস্থ রোগীদের আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতার জন্য একটি তহবিল গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে পাঁচ বছর আগে দেওয়া এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন এবং বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেয়।

রায়ের পর রিটকারীপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০১২ সালে জুন মাসে একজন গরিব পরিবার তাদের শিশু সন্তানকে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং ১৫ হাজার টাকা জমা দেয়।

কয়েকদিন চিকিৎসার পর শিশুটির মৃত্যু হলে চিকিৎসার ব্যয় বাবদ আরও ২৬ হাজার টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পারলে শিশুটির লাশ দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়।

২০১২ সালের ৮ জুন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ওই খবর প্রকাশিত হলে তা যুক্ত করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে সোমবার রায় এল।

রায়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে-

১. চিকিৎসার খরচ পরিশোধে অক্ষমতার কারণে কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করে রাখতে পারবে না।

২. বিল পরিশোধে অক্ষম গরিব রোগীদের চিকিৎসার খরচ পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে একটি তহবিল গঠন করতে হবে।

৩. প্রথম নির্দেশনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে একটি সার্কুলার জারি করতে হবে। দেশে অনুমোদিত সব ক্লিনিক-হাসপাতালে যাতে ওই সার্কুলার পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. সিটি হাসপাতাল থেকে ২০১২ সালের ৮ জুন সেই শিশুর লাশ হস্তান্তর না করা এবং অভিভাকরা সন্তানের লাশ নিতে না পারার বিষয়টি অমানবিক; তাতে মানবাধিকারের লংঘন হয়েছে। এ কারণে ওই হাসপাতালকে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে।