প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরার চেষ্টা করে পারছে না সরকার

পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের ধরার চেষ্টা করেও সরকার পারছে না বলে জানিয়েছেন শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 05:44 PM
Updated : 19 Nov 2017, 07:33 PM

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের উপস্থিতিতে রোববার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠনে একথা বলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান।

সদ্য সমাপ্ত জেএসসি পরীক্ষায় প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষার ঘণ্টাখানেক আগে প্রশ্ন ও তার উত্তর ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে। অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে ঢোকার আগে দলবেঁধে স্মার্টফোনে এসব প্রশ্ন-উত্তর দেখে পরীক্ষা দিতে যান।

এভাবে প্রশ্ন ফাঁসের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, এ ধরনের অপরাধকে এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে মেনে নেওয়া হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে সরকারের পাঠ্যাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বই হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি, কঠোর সাবধানতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে পারছি না। এর পেছনে দায়ী আমাদেরই কিছু সহকর্মী ও শিক্ষক। 

“তাদের ধরার চেষ্টা চলছে, কিন্তু পারছি না। আমরা ইনাদের সহকর্মী বলতে লজ্জা পাই। এটি থেকে বের হওয়ার জন্য সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।”

প্রশ্নফাঁসের জন্য শিক্ষকদের দায়ী করে আসা শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ এদিন এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট- সেকায়েপের আওতাধীন এই কর্মসূচিতে পুরস্কারের প্রায় ১১ লাখ বই হস্তান্তর করেন মন্ত্রী।

এসব বই আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ১২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৭ সালে প্রায় ২২ লাখ শিক্ষার্থী পাঠ্যাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বই পড়ায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং মূল্যায়ন পরীক্ষার মাধ্যমে সাড়ে সাত লাখ শিক্ষার্থী বিভিন্ন শাখায় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৮৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী বই পড়ায় অংশ নিয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, “আমাদের সেকায়েপ প্রকল্প খুবই সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং সেটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের চেষ্টা ও সহযোগিতায়। সেজন্য আমরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এবং বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কাছে কৃতজ্ঞ।”

তিনি বলেন, সারা দেশের ১২ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইপড়া কর্মসূচি চালু রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৩ শতাংশ মাদ্রাসা, বইপড়া কর্মসূচিতে মেয়েদের অংশগ্রহণের হার প্রায় ৬০ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ উপস্থিত ছিলেন।