গ্রেপ্তার যুবকের নাম মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন। জঙ্গি সংগঠনটিতে তিনি ‘শাহরিয়ার’ নামে পরিচিত বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তুরাগ থানা এলাকার বাউনিয়া থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার বিকালে গ্রেপ্তারের পর রোববার ঢাকার আদালতে নিলে মোজাম্মেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মোজাম্মেলকে আদালতে নিয়ে যান অভিজিৎ হত্যামামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব।
পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদুর বলেন, “অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে মোজাম্মেল হুসাইন।”
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহর প্রধান নেতা জিয়াউল হকের ‘নির্দেশে এবং পরিচালনায়’ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার স্বীকারোক্তি মোজাম্মেল দিয়েছেন বলে ডিএমপির মুখপাত্র জানান।
“অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের ভিডিও ফুটেজে প্রকাশিত আসামিদের মধ্যে সে অন্যতম।”
মোজাম্মেলের আগে গত ৫ নভেম্বর পুলিশ মোহাম্মদপুর থেকে আবু সিদ্দিক সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তিনিও হত্যায় সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাসহ নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে জঙ্গি কায়দায় হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী অভিজিৎ।
পদার্থবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি মুক্তমনা ব্লগ সাইট পরিচালনা করতেন তিনি। জঙ্গিদের হুমকির মুখেও বইমেলায় অংশ নিতে দেশে এসেছিলেন তিনি।
ঘটনার পর শাহবাগ থানায় অভিজিতের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারদের মো. তৌহিদুর রহমান গামা, শফিউর রহমান ফারাবী, আমিনুল মল্লিক, সাদেক আলী মিঠু, জুলহাস বিশ্বাস, মো. জাফরান হাসান ও মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহী কারাগারে রয়েছেন। আবুল বাসার নামে একজন এই মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় অভিজিৎ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দিতে দেরি হচ্ছে বলে এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তিতে জানিয়েছিল পুলিশ।
এরপর গ্রেপ্তার হলেন সোহেল ও মোজাম্মেল।
উপ-কমিশনার মাসুদুর বলেন, মোজাম্মেল জঙ্গি সংগঠনটির ‘ইনটেলিজেন্স উইং এবং মিডিয়া উইং’ এর প্রধান।
“এছাড়া সে জঙ্গিদের সাথে কথোপকথনে ফেইসবুক পেইজ, বালাকাট মিডিয়া, আল হিকমা মিডিয়া, অনুসিন্ধৎসু মিডিয়া পরিচালনার দায়িত্বে ছিল।”
তিনি বলেন, মোজাম্মেল ব্লগার নিলয় ও প্রকাশক দীপন এবং জুলহাস-তনয় হত্যাকাণ্ডেও অংশ নিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।