প্যারাডাইস পেপার্সে আব্দুল আউয়াল মিন্টুর নাম

সাম্প্রতিক আলোচিত প্যারাডাইস পেপার্সে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ তার পরিবারের সদস্যদের নাম এসেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2017, 06:57 AM
Updated : 18 Nov 2017, 07:28 AM

পানামা পেপার্স ও অফশোর লিকসের মতো প্যারাডাইস পেপার্সেও যাদের নাম এসেছে, তারা আইন ভেঙে সম্পদ গড়েছেন, সরাসরি এমনটা বলা হচ্ছে না।

প্রভাবশালী এই ব্যক্তিরা গোপনে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন এমন সব জায়গায়, যেখানে কর নিয়ে কড়াকড়ি নেই; সম্পদের উৎস নিয়েও কেউ মাথা ঘামাবে না।

গত বছর পানামা পেপার্স নিয়ে বিশ্বজুড়ে ঝড় ওঠার পর এই মাসের শুরুতে বারমুডার ল ফার্ম অ্যাপলবির গ্রাহকদের ১ কোটি ৩৪ লাখ নথি ফাঁস করে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে)।

আইসিআইজের কাছ থেকে এসব নথি পেয়েছে বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ ৬৭টি দেশের ৩৮০ জন সাংবাদিক; এখন চলছে এসব নথির বিশ্লেষণ; এতে বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন সব নাম।

ফাঁস হওয়া এই নথিতে আউয়াল মিন্টু, তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, ছেলে তাফসির আউয়াল ও তাবিথ আউয়ালের নাম পাওয়া গেছে।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মিন্টুর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মাল্টিমোড গ্রুপ। তিনি এই গ্রুপের চেয়ারম্যান, স্ত্রী নাসরিন ভাইস চেয়ারপারসন। তাদের তিন ছেলে তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল এবং তাজওয়ার আউয়াল এই গ্রুপের পরিচালক।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মিন্টুর ছেলে তাবিথ গত বছর বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাবিথ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অন্যতম সহসভাপতি।

প্যারাডাইস পেপার্সে অফশোর কোম্পানি হিসেবে এনএফএম এনার্জি লিমিটেডের সঙ্গে মিন্টু পরিবারের সংশ্লিষ্টতার তথ্য এসেছে, যে কোম্পানির এজেন্ট ল ফার্ম অ্যাপলবি।

কীভাবে অফশোর কোম্পানিতে আব্দুল আউয়াল মিন্টুর পরিবার, তা প্যারাডাইস পেপার্সে

‘করস্বর্গ’ হিসেবে পরিচিত বারমুডায় ১৯৯৯ সালে নিবন্ধিত এই কোম্পানির অংশীদার বা ‘অফিসার’ হিসেবে আউয়াল মিন্টু, নাসরিন আউয়াল, তাবিথ, তাফসির ও তাজওয়ারের নাম রয়েছে। তাদের ব্যবসায়িক ঠিকানা হিসেবে মাল্টিমোড গ্রুপের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে।

এই বিষয়ে মিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘কিছুই জানেন না’ বলে দাবি করেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তো এসবের কিছুই জানি না। যেখানে এই তথ্যটা এসেছে, কী তথ্য এসেছে, তা আমার দেখতে হবে, তা বিশ্লেষণ করতে হবে। তারপর আমার বক্তব্য আমি জানাব।”

মাল্টিমোড গ্রুপে আব্দুল আউয়াল মিন্টুর পরিবারের কে কী

মিন্টু প্রায় এক দশক যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। ১৯৮২ সালে দেশে ফেরার আগে সেখানে শিপিং ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন তিনি।

দুই ছেলের সঙ্গে আব্দুল আউয়াল মিন্টু দম্পতি (ফেইসবুক থেকে পাওয়া ছবি)

পানামা পেপার্স ও অফশোর লিকসে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী জাফর উল্যাহসহ বাংলাদেশের অন্তত দেড় ডজন ব্যক্তির নাম আসে, যারা বিদেশি ঠিকানা ব্যবহার করে শেল কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার।

যাদের নাম এসেছে, তারা আইন ভেঙে সম্পদ গড়েছেন- এমনটা বলছে না আইসিআইজে। তবে অর্থ পাচার করতে কিংবা কর ফাঁকি দিতে আইনের ফাঁক-ফোঁকর খুঁজেছেন অনেকেই।

অফশোর লিকসে বাংলাদেশিদের নামে প্রকাশে পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল, কিন্তু এরপর তদন্তের অগ্রগতির কোনো খবর মেলেনি।