মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরে আসছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরে আসছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2017, 05:13 AM
Updated : 17 Nov 2017, 05:13 AM

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং সুয়াং বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ওয়াং ই এ সপ্তাহেই বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করবেন এবং দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ও আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করবেন।     

সোম ও মঙ্গলবার তিনি মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে এশিয়া ও ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেবেন। তবে ওয়াং ইর আলোচনায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি আসবে কি না- সে বিষয়ে কিছু বলেননি গেং সুয়াং।  

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে অগাস্টের শেষ সপ্তাহে সেনাবাহিনীর ওই অভিযান শুরুর পর সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ ওই অভিযানকে চিহ্নিত করে আসছে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে। অন্যদিকে মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।  

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিয়ে এলেও তাদের দীর্ঘ দিনের মিত্র দেশ চীন তাদের পাশেই রয়েছে।

রাখাইনের সেনা অভিযানকে মিয়ানমার সরকার ‘অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা রক্ষার চেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে; আর এ বিষয়ে চীনের সমর্থন পাচ্ছে তারা।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের অবসানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে,যেখানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযানের ইতি টানতে এবং রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওআইসির পক্ষে সৌদি আরব ওই প্রস্তাব থার্ড কমিটিতে তোলে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেয়। ভোটাভুটিতে ১৩৫টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, বিপক্ষে ভোট দেয় চীন, রাশিয়াসহ দশটি দেশ।

মিয়ানমার সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বুধবার নেপিদোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। সেইসঙ্গে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা শুরু হলেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় বিষয়টি আটকে আছে।