লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ

জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া ঢাকার লেকহেড গ্রামার স্কুল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 06:26 AM
Updated : 14 Nov 2017, 10:26 AM

এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়।

আবেদনকারীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী রাশনা ইমাম রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দিতে হবে। আর সরকার যদি ওই স্কুলে জঙ্গি কাযক্রমের কোনো অভিযোগের তদন্ত করতে চায়, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে যাবে।

জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা, ধর্মীয় উগ্রবাদে উৎসাহ দেওয়াসহ কয়েকটি অভিযোগে গত ৬ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকায় লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেয়।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস মেহেদী পরদিন ওই স্কুলে গিয়ে সিলগালা করে দেন। সেদিন তিনি বলেন, স্কুলটি কোনো ধরনের কার্যক্রম চালালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচিত হবে।

ওই স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন এবং ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যায়। 

তাদের দুটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৯ নভেম্বর রুল জারি করে।

লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমণ্ডি শাখা বন্ধের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, কেন স্কুলের মালিককে স্কুল খোলা ও পরিচালনা করতে দেওয়ার জন্য বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম  চালু রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়রম্যানকে এর জবাব দিতে বলা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় সোমবার হাই কোর্টে রুলের ওপর শুনানি হয়। এরপর মঙ্গলবার রায়ে স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

আবেদনকারীপক্ষে আদালতে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। 

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল আপিলের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “স্কুলটি পরিচালনার জন্য ধানমণ্ডির ৬/এ সড়কের একটি বাড়ির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময় তারা স্কুলের স্থান পরিবর্তন করেছে। এখন তারা স্কুলটি চালাচ্ছে ধানমন্ডির ১১/এ’র একটি বাড়িতে। এটি আবাসিক এলাকা। এতে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নেই।

“তাছাড়া অনুমোদন দেওয়ার সময় যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে, স্কুলটির একটি ম্যানেজিং কমিটি থাকতে হবে, এই কমিটির নির্বাচনের আগে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে এবং আবাসিক এলাকা হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে… কোনো শর্তই স্কুলটি পূরণ করেনি। এ বিষয়গুলো আমি আদালতে তুলে ধরেছি।”

মাহবুবে আলম বলেন, তারা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং বুধবারই আবেদন জমা দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন।