সারাদেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে আদালতের নির্দেশ

গাড়ির নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ন সারাদেশে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2017, 12:24 PM
Updated : 5 Nov 2017, 01:23 PM

একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধি ১৯৯৭ ও শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধি ২০০৬ অনুযায়ী ঢাকার গুলশান, বনানী, অফিসার্স ক্লাব, বারিধারা ও ধানমণ্ডি এলাকাসহ সারাদেশে উচ্চ শব্দ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নজরদারি টিম (সার্ভিলেন্স টিম) গঠনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার (হাইওয়ে), ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সারাদেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষে রোববার আদালতে আবেদন এবং শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। 

মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সারা বাংলাদেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ করার জন্য আদালত নির্দেশনা দিয়েছে, ইতোপূর্বে যা শুধু ঢাকা শহরের জন্য ছিল। আজকে সম্পূরক আবেদনের প্রেক্ষিতে সারা বাংলাদেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।”

এর আগে গত ৮ অক্টোবর ঢাকায় গাড়ির মালিক-ড্রাইভারসহ যাদের কাছে হাইড্রোলিক হর্ন রয়েছে সেগুলো ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়া এবং জমা হওয়া পর সেসব হাইড্রোলিক হর্ন ধ্বংস করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের এই বেঞ্চ।

মনজিল বলেন, পরিবেশ বিধিমালা ১৯৯৭ এবং শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) ২০০৬-এ প্রত্যেকটি এলাকার জন্য সময়ভেদে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

যেমন, নির্জন এলাকার দিনের বেলা শব্দের মাত্রা হবে ৪৫ ডেসিবেল, রাতে হবে ৩৫ ডেসিবেল। আবাসিক এলাকায় দিনের বেলা শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ৫০ ডেসিবেল, রাতে ৪০ ডেসিবেল। সমন্বিত (আবাসিক এবং নির্জন এলাকা মিলে) এলাকায় তা হবে যথাক্রমে ৬০ এবং ৫০ ডেসিবেল।

বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে শব্দের মাত্রা হবে ৭০ ডেসিবেল, রাতে হবে ৬০ ডেসিবেল। শিল্প এলাকায় তা হবে যথাক্রমে ৭৫ ও ৭০ ডেসিবেল।

এ আইনজীবীর ভাষ্য, সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এ দুই বিধিমালার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রার শব্দ হয়ে থাকে বা হচ্ছে। ফলে শব্দ দূষণ ঘটছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করেই তার আবেদন।

মনজিল বলেন, “সার্ভিলেন্স টিম গঠন করে ওই টিমকে বলা হয়েছে, শব্দ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না, তা নজরে রাখতে। পাশাপাশি শব্দ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ আগস্ট রুল জারিসহ রাজধানীতে চলাচলকারী সব যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

২৭ আগস্টের পর কোনো গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন থাকলে সে গাড়ি জব্দ এবং হাইড্রোলিক হর্নের আমদানি বন্ধ করাসহ বাজারে যেসব হর্ন রয়েছে, তা জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।