রাজমনি প্রেক্ষাগৃহের পশ্চিম দিকে তমা সেন্টারের পাশের গলির একটি বাড়িতে বুধবার সন্ধ্যার এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাড়ির মালিক গ্রোসারি ব্যবসায়ী করিমসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই থানায় নিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনের একটি বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করিমের তৃতীয় স্ত্রী মুক্তাকে আটক করা হয় বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রমনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার নাবিদ কামাল।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আব্দুল করিম তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর চার বছর আগে তিনি মুক্তাকে বিয়ে করেন। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুক্তাকে আটক করা হয়েছে।”
করিমের তিন স্ত্রীই ঢাকায় থাকেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা কামাল বলেন, “আমরা তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকেও খুঁজছি। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
পুলিশ জানায়, গ্রোসারি ব্যবসায়ী করিম এফডিসিকেন্দ্রিক বাংলা সিনেমার প্রযোজনাও যুক্ত। বেশকিছু সিনেমা পরিচালনাও করেছেন তিনি। তার তৃতীয় স্ত্রী মুক্তা সিনেমার অভিনয় শিল্পী।
তমা সেন্টারের পাশের গলির যে বাড়িতে হত্যাকাণ্ড ঘটে তার পেছনেও ব্যবসায়ী করিমের ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া নয়া পল্টনে পলওয়েল মার্কেটে তার দোকান রয়েছে।
যে বাড়িটিতে হত্যাকাণ্ড ঘটে তার পঞ্চম তলার এক পাশে করিম তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছোট ছেলে শাওনকে নিয়ে থাকতেন। অন্য পাশে কেউ থাকতেন না। তবে হত্যাকাণ্ডের সময় করিম ঘরে ছিলেন না।
ওই সময় ফ্ল্যাটে থাকা শামসুন্নাহারের গৃহকর্মী রাশিদার ভাষ্য, বুধবার সন্ধ্যায় তিনি রান্নাঘরে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সময় কে বা কারা রান্নাঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। এসময় ঘর থেকে চিৎকারও শুনতে পান তিনি।
পরে ওই ভবনের দারোয়ান নোমান এসে রান্নাঘরের সিটকিনি খুলে দিলে বাইরে বের হয়ে হত্যার বিষয়টি দেখতে পান তিনি।
আর ভবনে দারোয়ান কাম তত্ত্বাবধায়ক নোমান বলছেন, ওপর থেকে একজন লোক নিচে এসে বলে, ‘ওপরে যান, সেখানে মারামারি লাগছে’। তখন তিনি উপরে উঠে পাঁচ তলার সিড়িতে শাওনের লাশ ও ভেতরে শামসুন্নাহারের লাশ দেখতে পান।
এ ঘটনায় গৃহকর্মী রাশিদা ও দারোয়ান নোমানসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহকর্তা আব্দুল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রেখেছে পুলিশ।
হত্যার ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান পুলিশের ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার নাবিদ কামাল।