গ্রেনেডের বণ্টন হয়েছিল মুফতি হান্নানের বাসা থেকে: রাষ্ট্রপক্ষ

২১ অগাস্ট হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেডগুলো জঙ্গিনেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের বাড্ডা এলাকার বাসা থেকে বণ্টন করা হয়েছিল বলে শুনানিতে বলেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2017, 04:34 PM
Updated : 1 Nov 2017, 11:58 AM

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার আলোচিত এই মামলার যুক্তিতর্ক শুনানিতে মঙ্গলবার মুফতি হান্নানের জবানবন্দি উদ্ধৃত করে এই দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান।

মঙ্গলবারের শুনানির পর আদালত আগামী ৬, ৭, ৮ নভেম্বর পরবর্তী যুক্তিতর্কের দিন রেখেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান  ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া।

১৩ বছর আগের এই মামলাটিতে নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এখন যুক্তিতর্ক শুনানি চলছে। রাষ্ট্রপক্ষের পর আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে রায় হবে।

পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন সড়কে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ এজলাসে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে মামলাটির বিচার চলছে।

পঞ্চম দিনের যুক্তিতর্কে সৈয়দ রেজাউর বলেন, “মুফতি হান্নান ও আহসানউল্লাহ কাজলের বাড্ডা এলাকার বাসা থেকে হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড, গুলি বিলি-বণ্টন করা হয়, যা মুফতি হান্নান ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক  জবানবন্দিতে ফাঁস করেছেন।”

হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান এই মামলার অন্যতম প্রধান আসামি। তবে অন্য মামলায় এই বছরই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দলটির তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হন।

সন্ত্রাসবিরোধী ওই সমাবেশের প্রধান অতিথি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ামাত্র গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।

বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর অধিকতর তদন্ত হয়। এতে আসামির তালিকায় যোগ হন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ ৩০ জন।

৫২ জন আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান এবং জামায়াত নেতা ও তৎকালীন মন্ত্রী আলী আহসান মো. মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

বাকি ৫০ আসামির মধ্যে সাবেক পুলিশ প্রধানরাসহ আটজন জামিনে রয়েছেন। পলাতক আছেন তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ আসামি। কারাগারে রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ বাকিরা।    

হত‌্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলা দুটির বিচার একসঙ্গে চলছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫১১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরার পর কারাবন্দি ২৩ এবং জামিনে থাকা আট আসামির আত্মপক্ষ সমর্থন ও সাফাই সাক্ষ্য শেষে গত ২৩ অক্টোবর শুরু হয় যুক্তি তর্ক শুনানি।

এই মামলা সংক্রান্ত আরও খবর