মঙ্গলবার ঢাকার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক সফিউল আজমের আদালতে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে জেরা করেন আসামি নাঈম আশরাফের আইনজীবী।
রুদ্ধদ্বার আদালতে জেরার পর বিচারক আগামী ১৪ নভেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আলী আকবর।
আসামি নাঈমের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার জেরার উত্তরে ওই তরুণী বলেছেন, ধর্ষিত হওয়ার পর ঘটনাটি তিনি তার মা, বাবা, ভাই, বোন কাউকে জানাননি।”
নাঈমের পক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলও ওই তরুণীকে জেরা করেন।
ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই তরুণী গত ১৬ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর থেকে তাকে জেরা করছেন আসামির আইনজীবীরা।
এ মামলার আসামিরা হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘ই-মেকার্স’ এর কর্মকর্তা নাঈম আশরাফ, রেগনাম গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ এবং সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।
সাফাতের জন্মদিনের পার্টির কথা বলে গত ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে বাদীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
মামলা হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে অভিযোগ আসে পুলিশের বিরুদ্ধেও। বাদী অভিযোগ করেন, বনানী থানা পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করেই দুই দিন পার করে দেয়। এর বাইরেও তাদের হয়রানি করা হয়।
গত ৬ মে বনানী থানায় ধর্ষণের ওই অভিযোগ দায়েরের পর ৮ জুন ঢাকার হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি। বাদীপক্ষে মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাফাত ও নাঈম ধর্ষণে সরাসরি অংশ নেন এবং বাকি তিনজন তাদের সহযোগিতা করেন।
ঘটনার এক মাসের বেশি সময় পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না পাওয়ার কথা জানালেও গাড়িচালক বিল্লাল ছাড়া বাকি চার আসামিই নিজেদের দায় স্বীকার করে হাকিমের কাছে জবানবন্দি দেন।
থানায় মামলা হওয়ার পাঁচদিন পর গত ১১ মে সিলেট থেকে সাফাত ও সাদমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৫ মে সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত ঢাকায় গ্রেপ্তার হন।
১৭ মে মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাঈম আশরাফকে, যিনি সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।
গত ১৩ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর শুরু হয় বিচার।