কুয়েত ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সোমবার রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহের এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ইউরোপের ২৮ দেশের এই জোট আলাদা বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে দুর্দশায় পড়া রোহিঙ্গাদের জন্য আগেই তিন কোটি ইউরো সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা।
এর বাইরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য দুই কোটি ১০ লাখ ইউরো ইতোমধ্যে বরাদ্দ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
সব মিলিয়ে চলতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিশ্রুত সাহায্যের পরিমাণ ৫ কোটি ১০ লাখ ইউরোতে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু সীমান্ত পেরিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখে পৌঁছে গেছে। ফলে বেড়ে গেছে চাহিদাও।
জেনেভায় সম্মেলনের আগে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির অফিস থেকে জানানো হয়েছিল, চাহিদার মাত্র ২৭ শতাংশ অর্থের প্রতিশ্রুতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস জেনেভায় তহবিল সংগ্রহ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যা ঘটছে তা এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা শরণার্থী সঙ্কট। ফলে ত্রাণ তৎপরতার গতি বাড়াতে আরও দ্রুত তহবিল ছাড় করা প্রয়োজন।
“বাংলাদেশ সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই, কারণ তারা সীমান্ত খোলা রেখেছে, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। যে উদারতার সঙ্গে তাদের সহায়তা করা হয়েছে, সেজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদেরও আমরা ধন্যবাদ জানাই।
“আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে এবং তাদের জন্য জরুরি সহায়তার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে, সেজন্যও আমরা ধন্যবাদ জানাই।”
“এর ফলে সাহায্য সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, আশ্রয়, পানি, পয়ঃনিষ্কাশনের মত জরুরি সহায়তার ব্যবস্থা করতে পারবে; চলমান সঙ্কটের মধ্যে নতুন মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক কমিশনার নিভিন মিমিকা বলেন, প্রাথমিকভাবে সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, তার বাইরে বাংলাদেশে আশ্রয় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজতে হবে।
“আমাদের মনোযোগ দিতে হবে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করার দিকে, যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরতে পারে। আর বাংলাদেশের স্থানীয় বাসিন্দা, এই সঙ্কটের কারণে যাদের নিদারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে, তাদের জন্যও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।”