ভাষা সংগ্রামী তকীয়ূল্লাহর সুচিকিৎসার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ভাষা সংগ্রামী এজেএম তকীয়ূল্লাহর উন্নত চিকিৎসায় সরকারি সহযোগিতা দেওয়ার পাশাপাশি তার সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2017, 12:16 PM
Updated : 22 Oct 2017, 12:16 PM

তকীয়ূল্লাহর মেয়ে সাংবাদিক শান্তা মারিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রোববার বিকালে জানান, শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন স্কয়ার হাসপাতালে এসে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

শান্তা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দুজনেই স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীকে ফোন করে আব্বার সুচিকিৎসায় যেন কোনো ত্রুটি না হয়, সেজন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সামরিক সচিব আমাদের তাই জানিয়েছেন।”

এই ভাষা সংগ্রামীর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে শান্তা বলেন, “রোববার বিকাল চারটার দিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আব্বার শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতি হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন।”

গত ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ভাষা সংগ্রামী তকীয়ূল্লাহকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে ভর্তি করে নেন। শুক্রবার সকালে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শান্তা মারিয়া জানান, তার বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। নিউমোনিয়া তার ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ফুসফুস ক্রমশ অকেজো হয়ে আসছে।

৯১ বছর বয়সী ভাষা সংগ্রামী ষাটের দশকে কমিউনিস্ট পার্টির আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তখন নানা পর্যায়ে তাকে জেল খাটতে হয়েছে। ষাটের দশকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তিনি একই জেলে বন্দি ছিলেন।

রাজনীতিবিদ, গবেষক এজেএম তকীয়ূল্লাহ ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর চতুর্থ ছেলে। বর্তমানে বাংলাদেশ যে বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে, তার সংস্কার হয়েছিল তকীয়ূল্লাহর হাত দিয়েই। 

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের যেসব ছবি এখন পাওয়া যায়, সেগুলো তারই তোলা। সে সময়ের এই বাম নেতাকে ১৯৫১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে কাটাতে হয়।

চল্লিশের দশক থেকে দীর্ঘদিন কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এজেএম তকীয়ূল্লাহ। ১৯৫১ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর তার ছোট ভাই। আর তার ভাতিজি গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

এজেএম তকীয়ূল্লাহর ছেলে আহমেদ ইউসুফ আব্বাস অগ্রণী ব্যাংকের একজন ডিজিএম। আর মেয়ে শান্তা মারিয়া দৈনিক আমাদের সময়ের ফিচার সম্পাদক।

২০০৭ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল) থেকে তার আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘পলাতক জীবনের বাঁকে বাঁকে’ প্রকাশিত হয়।

কেউ সহায়তা করতে চাইলে তকীয়ূল্লাহর ছেলে আহমেদ ইউসুফ আব্বাস (মোবাইল নম্বর -০১৮১৯২৫৪৩৬০) অথবা শান্তা মারিয়ার (মোবাইল নম্বর-০১৭১১৪৬০৭৪৮) সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।