ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির দিনগুলোতে কর্মচারীদের বেতন দেওয়াটাই তাদের চিন্তা হয়ে দাঁড়ায়।
দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় প্রতিবছর এখানকার ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেও সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ ঝরেছে তাদের কণ্ঠে।
শনিবার মার্কেটের এক নম্বর গেইট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের শাহ নেওয়াজ হোটেল পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। মিরপুর রোডের দিকে দুই ও তিন নম্বর গেইটে না থাকলেও মার্কেটের ভেতরে হাঁটু পানি থাকায় ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। পানি মার্কেটের দক্ষিণ ভবনের নিচতলায়ও।
দুই-একটি দোকান খোলা থাকলেও পানি থেকে মালামাল বাঁচাতেই ব্যস্ত দেখা গেছে বিক্রেতা আর কর্মচারীদের।
এক নম্বর গেইটে কথা হলো গিফট প্লাস দোকানের কর্মচারী হারুনুর ইসলাম অপুর সাথে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরো মার্কেটে পানি আর পানি। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় গত রাতে দোকানগুলোতে পানি উঠেছে।”
পুরো মার্কেটেই হাঁটুপানি বলে জানান নিরাপত্তাকর্মী মো. হেলাল উদ্দিন।
“অনেক দোকানের ক্ষতি হয়েছে। তবে রাতে অনেক দোকানে মালপত্র গুছিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের ক্ষতি হয়নি।”
জলাবদ্ধতা দেখিয়ে মার্কেটের মসজিদের পাশের শিল্পী টেইলার্সের মালিক মো. মাহবুবুল হোসেন বাদল বলেন, “পানির কারণে কাস্টমার আসে না, তারপরও বসে আছি। দোকানে ছয়জন কর্মচারী আছে, তাদেরকে বেতন দিতে হবে।”
কর্মচারীদের মালামাল ঠিকঠাকভাবে গুছিয়ে রাখার নিদের্শনা দিচ্ছিলেন ব্যাগের দোকান মামুন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক ইসমাইল খলিল বাবু।
তিনি বলেন, “বৃষ্টির জন্য রাতেই মালগুলো উঁচুতে রেখেছি। পানি তো বাড়ছে,তাই আরো উঁচতে রাখছি। টানা বৃষ্টির কারণে ক্রেতা আসছে না। আবার কর্মচারী চারজনকে বেতন দিতে হচ্ছে। যদি আবার মালগুলো ভিজে যায়, তাহলে তো লোকসান হয়ে যাবে।”
মার্কেটের দুই নম্বর গেইটে দেখা গেল পাম্প বসিয়ে পানি সরানো হচ্ছে। সেখানে ছিলেন নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন।
মার্কেটে জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বৃষ্টির পানি ড্রেনে যেতে না পারায় মার্কেটের ভেতরে আটকে গেছে। মেশিন দিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। এরকম হলে মার্কেটের তো ক্ষয়ক্ষতি হয়, ক্রেতারা আসতে পারে না, বেচাকেনা হয় না। মালপত্র ভিজে যায় অনেক সময়।”
“মূলত ড্রেনেজ ব্যবস্থা কারণে পানি মার্কেটের ভেতরে ঢুকে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়।”
দুইদিনের বৃষ্টিতে মার্কেটের নিচতলার ৭০ শতাংশ দোকানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সিটি করপোরেশন শুধু ভাড়াই নেয়, কোনো সার্ভিস দেয় না। দোকানের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের সার্ভিস দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা পাই না।”