ইতালির ভিচেঞ্চায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে তার ভাগ্নি মারতা আলেসান্দ্রো জানিনের বরাত দিয়ে প্যারিস প্রবাসী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রবীশঙ্কর মৈত্রী জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফেইসবুক লাইভে এসে রবীশঙ্কর মৈত্রী বলেন, “দার্শনিক, লেখক, অনুবাদক ও মানবসেবক ফাদার মারিনো রিগন দেহত্যাগ করেছেন। এই মাত্র তিনি মায়াত্যাগ করে চলে গেছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি ইতালির ভিচেঞ্চায় বিশেষ যত্নে ছিলেন। তার আর বাংলাদেশে ফেরা হল না। ফাদার রিগনের ভাগ্নি মারতা জানিন ইতালির ভিল্লভেরলা থেকে শোক সংবাদটি জানালেন।”
ফাদার মারিনো রিগন ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির ভেনিসের কাছে ভিল্লভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসেন। দেশের নানা জায়গা ঘুরে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন বসবাস করেন তিনি।
বাংলা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে গবেষণার পর তা ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন ফাদার মারিনো রিগন। তার হাত দিয়ে ইতালীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ প্রায় ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, লালন সাঁইয়ের ৩৫০টি গান, জসীম উদদীনের নকশীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট ছাড়াও এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কবিদের অনেক কবিতা।
ফাদার রিগন বাংলার নকশিকাঁথাকেও তুলে ধরেছেন ইতালির বিভিন্ন শহরে। তার প্রতিষ্ঠিত শেলাবুনিয়া সেলাই কেন্দ্রের উৎপাদিত নকশিকাঁথার চারটি প্রদর্শনী হয় ইতালির বিভিন্ন শহরে।
১৯৮৬ সালে ফাদার রিগনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের একটি নৃত্যনাট্যের দল ‘নকশীকাঁথার মাঠ’ মঞ্চায়ন করে ইতালির মঞ্চে।
২০০১ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে ইতালি নিয়ে যেতে চান।