বনানী ধর্ষণ: বাদীকে হুমকির অভিযোগে থানায় জিডি

জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলার বাদী ফোনে হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2017, 02:45 PM
Updated : 20 Oct 2017, 02:45 PM

গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত বুধবার করা ওই জিডিতে মামলার বাদী বলেছেন, তাকে ‘ফোন করে হুমকি ও আজেবাজে কথা’ বলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে মামলার বাদীর মোবাইলে ফোনে করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাকে উদ্ধৃত করে একটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের পরিবারে পক্ষ থেকে ফোন করে ‘মিটমাট করে ফেলার জন্য’ চাপ দেওয়া হচ্ছে।

সাফাতসহ এ মামলার পাঁচ আসামির সবাই বর্তমানে কারাগারে আছেন। চাপ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে সাফাতের পরিবারের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি। 

এ মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ-কমিশনার ফারিদা রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা চার্জশিট দিয়ে রেখেছি। কোর্ট এটা স্ট্রংলি নিয়েছে। এটা এখন সম্পূর্ণ কোর্টের হাতে।”

সাফাত ছাড়া মামলার বাকি আসামিরা হলেন তার বন্ধু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘ই-মেকার্স’ এর কর্মকর্তা নাঈম আশরাফ, রেগনাম গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ এবং সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাফাতের জন্মদিনের পার্টির কথা বলে গত ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে বাদীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়।

মামলা হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে অভিযোগ আসে পুলিশের বিরুদ্ধেও। বাদী অভিযোগ করেন, বনানী থানা পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করেই দুই দিন পার করে দেয়। এর বাইরেও তাদের হয়রানি করা হয়।

গত ৬ মে বনানী থানায় ধর্ষণের ওই অভিযোগ দায়েরের পর ৮ জুন ঢাকার হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি। বাদীপক্ষে মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করেন তিনি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাফাত ও নাঈম ধর্ষণে সরাসরি অংশ নেন এবং বাকি তিনজন তাদের সহযোগিতা করেন।

ঘটনার এক মাসের বেশি সময় পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না পাওয়ার কথা জানালেও গাড়িচালক বিল্লাল ছাড়া বাকি চার আসামিই নিজেদের দায় স্বীকার করে হাকিমের কাছে জবানবন্দি দেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

এ মামলার বিচার চলছে ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। গত ১৭ অগাস্ট বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্যে দিয়ে এ মামলার শুনানি শুরু হয়।