ভাষা সংগ্রামী তকীয়ূল্লাহর অবস্থার ‘অবনতি’

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ভাষা সংগ্রামী এজেএম তকীয়ূল্লাহর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2017, 09:55 AM
Updated : 20 Oct 2017, 09:55 AM

তার মেয়ে শান্তা মারিয়া শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার বাবার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার ফুসফুস ক্রমশ ‘অকেজো’ হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন ওই বোর্ডের সদস্যরা।

৯১ বছর বয়সী মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিউতে নেন।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সালেহীনের বরাত দিয়ে শান্তা মারিয়া বলেন, “আব্বার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। নিউমোনিয়া আরও ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে, কিন্তু ফুসফুসের অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতাও কমে আসছে।”

গত বছর হার্ট অ্যাটাকের পর তকীয়ূল্লাহর হৃদযন্ত্রের অবস্থাও ‍খুব একটা ভালো নয় বলে চিকিৎসকরা তার পরিবারকে জানিয়েছেন।

শান্তা জানান, এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বাবাকে দেশের বাইরে নেওয়াও সম্ভব নয়।

“আব্বার চিকিৎসার বিপুল ব্যয়ভার বহন করাও আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠেছে। সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে সহায়তা পেলে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য সহজ হয়।”

কেউ সহায়তা করতে চাইলে তকীয়ূল্লাহর ছেলে আহমেদ ইউসুফ আব্বাস (মোবাইল নম্বর -০১৮১৯২৫৪৩৬০) অথবা শান্তা মারিয়ার (মোবাইল নম্বর-০১৭১১৪৬০৭৪৮) সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

রাজনীতিবিদ, গবেষক এজেএম তকীয়ূল্লাহ ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর চতুর্থ ছেলে। বর্তমানে বাংলাদেশ যে বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে, তার সংস্কার হয়েছিল তকীয়ূল্লাহর হাত দিয়েই।  

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের যেসব ছবি এখন পাওয়া যায়, সেগুলো তারই তোলা। সে সময়ের এই বাম নেতাকে ১৯৫১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে কাটাতে হয়।

চল্লিশের দশক থেকে দীর্ঘদিন কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এজেএম তকীয়ূল্লাহ। ১৯৫১ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর তার ছোট ভাই। আর তার ভাতিজি গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

এজেএম তকীয়ূল্লাহর ছেলে আহমেদ ইউসুফ আব্বাস অগ্রণী ব্যাংকের একজন ডিজিএম। আর মেয়ে শান্তা মারিয়া দৈনিক আমাদের সময়ের ফিচার সম্পাদক।

২০০৭ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল) থেকে তার আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘পলাতক জীবনের বাঁকে বাঁকে’ প্রকাশিত হয়।