কবিতাই আবৃত্তিশিল্পীদের অস্ত্র: সংস্কৃতিমন্ত্রী

কবিতাকে আদর্শ হিসেবে নিয়ে সামাজিক নানা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আবৃত্তিশিল্পীদের একাট্টা হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2017, 08:06 AM
Updated : 19 Oct 2017, 12:34 PM

তিনি বলেছেন, ‘কবিতাই হচ্ছে আবৃত্তিশিল্পীদের অস্ত্র’।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত জাতীয় প্রায়োগিক কর্মশালা এবং বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে একথা বলেন তিনি।

সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, “সুন্দরভাবে কবিতা উপস্থাপন ও আবেগে বিহ্বল হওয়াই কবিতার মুখ্য বিষয়ক নয়, বরং কবিতা আমাদের অনেক বেশি দায়িত্ব ও কর্তব্য কাঁধে নেওয়ার কথা বলে। আর সেটি হল সমাজ বিনির্মাণ।

ফাইল ছবি

“কবিতাকে ধারণ করতে করতে হবে আদর্শের জায়গা থেকে, সেটি আমাদের বড় শক্তি। সব রকম অন্যায়-অত্যাচার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হতে আবৃত্তি শিল্পীরা যে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ায় সেটি হচ্ছে কবিতা।”

আবৃত্তিশিল্পী আসাদুজ্জামান নূর তার অনুজদের উচ্চারণের দিকে মনযোগী হতে পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “ভুল উচ্চারণ কানে লাগে... যেমন ভুল বানান চোখে লাগে। উচ্চারণের ব্যাপারে আবৃত্তি শিল্পীদের গভীর মনোযোগ দিতে হবে। কণ্ঠ ও উচ্চারণের বাইরে যেটি প্রয়োজন, সেটি হল কবিতার গভীরে প্রবেশ করা।”

তিনি আবৃত্তি চর্চাকারীদের প্রতিটি পাড়ায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে গিয়ে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিচর্চায় উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকামউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা এবং বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী।

কর্মশালায় সারা দেশের আবৃত্তি সংগঠনগুলো থেকে ছয় শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিচ্ছে।

এতে প্রশিক্ষক হিসেবে থাকছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আশরাফুল আলম, গোলাম সারোয়ার, ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, হাসান আরিফ, মো. আহকামউল্লাহ্, রূপা চক্রবর্তী, নিরঞ্জন অধিকারী, মাহিদুল ইসলাম, শিমুল মুস্তাফা, বেলায়েত হোসেন, ইশরাত নিশাত এবং রাহুল আনন্দ।

কর্মশালায় ছয়টি আবৃত্তি প্রযোজনা মঞ্চস্থ হবে। সেগুলো হল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পরানের গহীন ভিতর’, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের ‘প্রীতিভাণ্ডারের চাবি’, কুমিল্লা আবৃত্তি সংসদের ‘অশ্বমেধের ঘোড়া’, কণ্ঠশীলনের ‘মহীয়সী ঘোড়া’, কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এই জাতীয় প্রায়োগিক কর্মশালা এবং বার্ষিক সম্মেলন আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

যাত্রার দুর্দিনে অনুদানের ঘোষণা

ঐতিহ্যবাহী যাত্রা শিল্পের দুর্দিনে শিল্পটির উন্নয়নে সরকারি অনুদান  দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

বৃহস্পতিবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আশ্বাস দেন।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “যাত্রাশিল্প পথ হারিয়ে ফেলেছে। যাত্রাশিল্প এখন একটা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বহুদিন ধরে চর্চার অভাবে যাত্রাশিল্পের গুণগতমানও লোপ পেয়েছে।

“যাত্রাশিল্প আজকের এ সংকট থেকে উত্তরণের যাত্রাশিল্পের জন্য অনুদান প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে জেলা শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় এটি করা হবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের উপদেষ্টা গোলাম সারোয়ার।