ঔষধ প্রশাসনের বরখাস্ত কর্মকর্তা চাকরিতে কীভাবে, প্রশ্ন হাই কোর্টের

রীড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার দায়ে ঔষধ প্রশাসন থেকে বরখাস্ত এক কর্মকর্তা কীভাবে এখনও চাকরিতে আছেন- তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2017, 11:01 AM
Updated : 17 Oct 2017, 11:01 AM

ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে এক সপ্তাহের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আদালত।

এ বিষয়ে একটি আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।

আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, রীড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার দায়ে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে আদালতের নির্দেশে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

“দুই কর্মকর্তার মধ্যে ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম তথ্য গোপন করে বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবেদন করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে। এর মধ্যে তিনি কাজও শুরু করেছেন।”

বিষয়টি জানার পর আদালতে এই আবেদন করা হয় জানিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, “আজ হাই কোর্ট তার কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করেছে।”

বরখাস্ত হওয়ার পর শফিকুল ইসলাম আবার কীভাবে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন বা কীভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তা এক সপ্তাহের মধ্যে ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আদালত বিষয়টি আগামী ২৬ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছে।

রীড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে ২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সারা দেশে ২৮টি শিশুর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করলেও তাদের সবাই খালাস পেয়ে যান। 

ঢাকার ঔষধ আদালতের বিচারক আতোয়ার রহমান গত বছরের ২৮ নভেম্বর ওই রায়ে বলেন, মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তখনকার সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেনের ‘অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে’ রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

আদালতের ওই রায় আসার পরও ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ হাই কোর্টে গেলে স্বাস্থ্য সচিব প্রথমে জানান, ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে।

পরে আদালতের আদেশে ২৪ অগাস্ট আরেক প্রতিবেদনে শফিকুল ও আলতাফকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয় আদালতকে।

রীড ফার্মার বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসনের ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে হাই কোর্টে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত ৯ মার্চ ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে।