তামাকপণ্যের সারচার্জ যাবে ১৪ খাতে

তামাকজাত পণ্যের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপের তিন বছর পর এই অর্থ ব্যয়ের জন্য ১৪টি খাত চিহ্নিত করেছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2017, 12:09 PM
Updated : 16 Oct 2017, 12:09 PM

এজন্য সোমবার মন্ত্রিসভা ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি-২০১৭’ নামের একটি নীতিমালাও অনুমোদন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এই বৈঠক হয়।

বৈঠকের পর সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “তামাক পণ্যের উপর এক শতাংশ হারে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ থাকলেও এই অর্থ খচরের কোনো নীতি ছিল না, এখন এটা নীতিমালার আওতায় এলো”

নীতিমালা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ হিসেবে পাওয়া অর্থ ১৪টি খাতে খরচ করা যাবে বলে জানান মন্ত্রিপারিষদ সচিব।

এর মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কার্যক্রম পরিচালনা, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্সসহ অন্যান্য কাজ বাস্তবায়নে সহায়তা, এনবিআরের অধীনে টোবাকো ট্যাক্স সেলের কার্যক্রম পরিচালনা, তামাকের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে প্রচার ও প্রশিক্ষণ এবং তামাকের ব্যবহার, ক্ষয়ক্ষতি ও গবেষণায় এই অর্থ খরচ করা যাবে।

এছাড়া তামাকবিরোধী আইন নিয়ে সচেতনামূলক কার্যক্রম, তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে কর্মরত সংস্থাগুলোর জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা, তামাক চাষরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং তামাক চাষীদের বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করতেও এই অর্থ খরচ করা যাবে বলে জানান সচিব শফিউল আলম।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ধুমপানমুক্ত হবে, সেটাকে টার্গেট রেখে এই কার্যক্রম চলছে।”

২০১৪ সালের জুলাই আমদানি করা ও দেশে তৈরি তামাকজাত সব ধরনের পণ্যের উপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয়। এই খাত থেকে বছরে ৩০০ কোটি টাকা আসে, যা স্বাস্থ্য খাতেই খরচ করা হয়।

কিন্তু ওই অর্থ ব্যয়ের বিধিমালা তৈরি না হওয়ায় গত তিন অর্থবছরে তামাকের সারচার্জ থেকে পাওয়া পাওয়া প্রায় ৯০০ কোটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে অলস পড়ে আছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে।

বাংলাদেশে সমন্বিত ও পরিকল্পিত উপায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি’ ও ‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি’ শিরোনামে দুটি নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সম্প্রতি সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটি তামাকজাত পণ্য থেকে পাওয়া সারচার্জের অর্থ সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মানোন্নয়নে ব্যবহারের সুপারিশ করেছিল।

বিজ্ঞানীদের অবসরের বয়স কমল

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ আইন সংশোধন করে বিশেষ মেধা ও যোগ্যতাসম্পন্ন বিজ্ঞানীদের অবসরের বয়স বাড়ানো হলেও এনিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় ওই বিধানটি বাতিলে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

শফিউল আলম বলেন, “যারা বিশেষ মেধা ও যোগ্যতার অধিকারী গবেষক হবেন তাদের চাকরির সীমা হবে ৬৭ বছর। কিন্তু এই আইন প্রয়োগ করতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন গবেষকদের আলদা করার কথা ছিল। ওই নীতিমালা না হওয়ায় সমস্যা হয়েছে।

“প্রয়োজনীয় নীতিমালা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। যারা উপযুক্ত নন তারাও বলছেন তাদের অবসরের বয়স ৬৭ বছর হবে। তারা আদালতে গিয়ে যদি মামলা করে দেয়। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে এটা আপাতত রহিত করার জন্য, মন্ত্রিসভা সেটা অনুমোদন দিয়েছে।”

সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমি আইনের খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।

তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৫ সালে এটাকে করপোরেট বডি হিসেবে রূপ দেওয়া হয়।

“১৯৭৯ সালের একটি অর্ডিন্যান্সের আওতায় এটিকে ইনস্টিটিউট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেহেতু এই ইনস্টিটিউটের মূল আইন ১৯৭৯ সালের, তাই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্শাল ল’ আমলের আইন হওয়ায় তা অবৈধ হয়ে গেছে। এখন এই আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন করে করা হচ্ছে।”