জামায়াতের হরতালের আঁচ ছিল না জনজীবনে

জোটসঙ্গী বড় দল বিএনপি সমর্থন দিলেও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালের কোনো প্রভাব রাজধানীর জনজীবনে দেখা যায়নি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2017, 11:11 AM
Updated : 12 Oct 2017, 04:11 PM

হরতালের সমর্থনে রাজপথে জামায়াতের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ঢাকার বাইরের চিত্রও ছিল একই।

ঢাকা থেকে দূর পাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল ছিল স্বাভাবিক; ঢাকার ভেতরে সড়কে অন্য দিনের মতোই ছিল যানজট। দোকানপাটও ছিল খোলা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “কোথাও হরতালের আঁচ পড়েনি। জনগণ হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে।”

দলের আমির মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানসহ আট নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছিল জামায়াত।

বৃহস্পতিবার সকালে এক ‘জরুরি সংবাদ সম্মেলনে’ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জোটসঙ্গী দলের এই কর্মসূচিতে তার দলের সমর্থনের  কথা জানান।

হরতালে রাজধানীর বাংলামটর এলাকার চিত্র। ছবিটি সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তোলা। ছবি: আব্দুল মান্নান

রমনা বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোর থেকে রাজপথে অবস্থান নিলেও হরতালের কোনো মিছিল দেখতে পাননি তিনি।

“কোনো গলি দিয়েও মিছিল বের করার খবর পাওয়া যায়নি। সব কিছুই স্বাভাবিক। রাস্তায় অনেক গাড়ি। দোকানগুলোও খোলা হয়েছে যথা সময়ে।”

মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন, গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ, লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খানও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের এলাকায় হরতালকারীদের কোনো তৎপরতা ছিল না।

মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত সড়কে গাড়ি একটু কম ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দিনের মতো গাড়ি দেখা যায়। বিএনপি সমর্থন দেওয়ার পরও তার কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার শাহেন শাহ ও যাত্রাবাড়ী জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ইফতেখারুল আলম বলেন, তাদের এলাকায় হরতালের সমর্থনে কোনো মিছিল বের হয়নি।

বাস ও লঞ্চ  চলাচল স্বাভাবিক

বেলা ১২টার দিকে ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে ছেড়ে যেতে দেখা যায়।

সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাসে উঠছে মানুষ। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

ইউনিক পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হরতালে তাদেরসহ অন্যান্য কোম্পানির গাড়িগুলো সময়মতোই ছেড়ে যাচ্ছে।

ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে আটটি এবং চট্টগ্রামের পথে আটটি বাস ছেড়ে যায় ইউনিক পরিবহনের।

সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকেট কাউন্টারগুলোর চিত্র। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

পথে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান হক। তবে তিনি বলেন, যাত্রী সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর পরিবহন পরিদর্শক নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হরতাল যে আছে তা অনেক যাত্রীই জানেনই না।”

দুপুর পর্যন্ত নয়টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকালে নির্ধারিত লঞ্চগুলোও ছাড়বে বলে জানান তিনি।

এদিকে হরতালে পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর সব বিপণি বিতান ও দোকানগুলো খোলা ছিল।