বিচারকদের চাকরিবিধি: আপিল বিভাগের সঙ্গে ‘বসবেন’ আইনমন্ত্রী

অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের সুরাহা করতে আপিল বিভাগের সব বিচারকের সঙ্গে বসবে আইন মন্ত্রণালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2017, 01:13 PM
Updated : 11 Oct 2017, 01:13 PM

গেজেট প্রকাশের জন্য আদালত সরকারকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত যে সময় দিয়েছে, তার আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার সঙ্গে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠক করার পর বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের দীর্ঘ টানাপড়েনের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ওই বিধিমালার খসড়া সুপ্রিম কোর্টে জমা দিলেও প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা গত ৩০ জুলাই তা গ্রহণ না করে কয়েকটি শব্দ ও বিধি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিচারপতি সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর বিচারকদের চাকরিবিধির বিষয়টি প্রথম আপিল বিভাগে ওঠে গত রোববার।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সেদিন আবারও সময় চাইলে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ ৫ নভেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দেয়। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহের কথা বলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।

বুধবার তার সঙ্গে বৈঠকের পর আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে বিচারপতি ওয়াহহাব মিয়ার সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং এটা নিয়ে তারা বসবেন।

“পুরো আপিল বিভাগের যে বিচারপতিরা আছেন, আর আমরা সকলে মিলে বসে এটার বিষয়ে একটা সুরাহা করব ইনশাল্লাহ। তাছাড়া আমার মনে হয়, যেভাবে আলাপ হয়েছে, আগামী তারিখ যেটা (৫ নভেম্বর), তার আগেই একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব।”

ছুটিতে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে প্রধান বিচারতি যে চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আনিসুল হক বলেন, “গতকাল যখন এটা আমার কাছে এসেছে, আমি সেটা সই করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজকে সই করেছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জে আছেন, তিনি বিকালে ফিরবেন, তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।”

আইনমন্ত্রী জানান, আগামী ২ ডিসেম্বর জুডিশিয়াল কনফারেন্স হওয়ার কথা। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির মতামত নিতে এসেছিলেন তিনি।

“তাছাড়া কিছু অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ চেইঞ্জ উনি করবেন, সেগুলো আমাকে অবহিত করেছেন। প্রধানত এ দুটো বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।”

আইন  সচিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর তিনি বিদেশে থাকতে চান। অর্থাৎ, ২ ডিসেম্বর যখন জুডিশিয়াল কনফারেন্স হবে, তখন বিচারপতি সিনহার দেশেই থাকার কথা। 

গত ২ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপণের তথ্য অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কথা বলে ৩ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন। ওই সময়ের জন্যই বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে নতুন বিচারক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, হাই কোর্ট ডিভিশনের বেশ কয়েকজন বিচারপতি অবসরে গেছেন। সেখানে বিচারপতি নিয়োগের চিন্তা-ভাবনা তো আমরা করবই।… আর আপিল বিভাগ কিন্তু তিন জনকে দিয়েও হয়েছে। আপিল বিভাগ সম্পর্কেও আমরা চিন্তা-ভাবনা করব।”