শরণার্থীর এই ভার বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই: কাদের

সরকার ‘সতর্কতার সঙ্গে’ রোহিঙ্গা সঙ্কট সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরণার্থীদের এই ‘বিশাল বোঝা’ বহন করার ক্ষমতা বাংলাদেশের নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2017, 07:56 AM
Updated : 27 Sept 2017, 07:04 PM

নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই জনস্রোতের সঙ্গে কোনোভাবে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে কিনা- তা নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঈদ পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকারের অবস্থানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। আমরা সতর্কতার সাথে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি। যেভাবে রোহিঙ্গাদের স্রোত আমাদের দেশে ছুটে আসছে এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অলরেডি এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী চলে এসেছে।”

সরকার ইতোমধ্যে এই উদ্বেগের কথা জাতিসংঘকে জানিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান কাদের।

“এই বিশাল বোঝা বয়ে বেড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা হাওড় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত, বন্যার জন্য অর্ধেক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এজন্য আমরা বারবার জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

“সন্ত্রাস দমনের নামে নিরীহ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য চার বার মিয়ানমারের প্রতিনিধিকে ফরেন অফিস ডেকে পাঠিয়েছে, আমাদের জোরালো বক্তব্য আমরা উত্থাপন করেছি।”

মিয়ানমারের নাগরিকদের অবিলম্বে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের জোরালো পদক্ষেপ চেয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

“এখানে আরও অনেক সমস্যা আছে। এত মানুষ আসছে, নির্যাতিত মানুষের সঙ্গে মাদকের স্রোতও আসছে কিনা এবং অস্ত্রের কোনো বিষয় যুক্ত হচ্ছে কিনা- এটা তো আমাদের জন্য আরও বেশি উদ্বেগের।”

রোহিঙ্গাদের দুর্দশার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কাদের বলেন, রাখাইনে গুলি করে, গান পাউডার ছিটিয়ে মানুষ হত্যার খবর এসেছে। নারী-পুরুষ-শিশুরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে।

“তাদের আসার পথটাই রক্তস্রোত। অনেকে আবার নাফ নদীতে ডুবেও মরছে।… আমরা যদি অমানবিক হতাম, তবে এই দেড় লাখ তো আসার কথা ছিল না। একদিকে আমরা পুশইনের প্রতিবাদ করছি, পাশাপাশি মানবিক আচরণ দেখাতেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।”

রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি এবং একটি সেনা ক্যাম্পে গত ২৪ অগাস্ট হামলার পর সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে শুরু হয়েছে শরণার্থীর ঢল।

জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে দমন অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা তিন লাখে পৌঁছাতে পারে।

যেভাবে দলে দলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।