প্রতিশ্রুত সময়েই ঢাকা সাফ করার আশ্বাস মেয়রের

নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে প্রতিশ্রুত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা থেকে কোরবানির পশু বর্জ্য অপসারণ শেষ করা যাবে বলে আশা করছেন মেয়র সাঈদ খোকন।   

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2017, 02:04 PM
Updated : 3 Sept 2017, 09:03 AM

শনিবার ঈদের দিন বেলা ২টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ধোলাইখাল এলাকায় বর্জ্য অপসারণ কাজের উদ্বোধন করে মেয়র এ কথা বলেন।

একই সময়ে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে পশুর হাটে বর্জ্য অপসারণের উদ্বোধন করেন উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডোর এম এ রাজ্জাকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

তারাও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সবার সহযোগিতা চান।

মেয়র খোকন বলেন, “ইনশাল্লাহ, আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর উভয় এলাকার কোরবানির যে বর্জ্য, সেটা সরিয়ে মানুষকে একটা পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দেব। কাল দুপুর ২টায় উত্তর সিটি করপোরেশনের অফিসে এ ব্যাপারে আপনাদের অবহিত করব।

“আশা করি, নাগরিকদের সহযোগিতা, সম্পৃক্ততা এবং অংশগ্রহণ থাকলে আমরা আমাদের ঘোষিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।”

যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাইয়ের কারণে পরিবেশ দূষণ এড়াতে এবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৬২৫টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫৪৯টি স্থান পশু কোরবানির জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বরাবরের মতই নগরজুড়ে রাস্তা ও অলিগলিতে পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখা গেছে।

ঈদের আগে সিটি করপোরেশন বলেছিল, এবার ঢাকায় প্রায় চার লাখ ৭৫ হাজার পশু কোরবানি হতে পারে।

এসব পশুর বর্জ্য সরিয়ে নিতে দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ১৭ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত থাকবে বলে জানান মেয়র।

কোনো এলাকার রাস্তায় কোরবানির পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখলে সিটি করপোরশেনের হটলাইন ০৯৬১১০০০৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তা জানানোর আহ্বান জানান তিনি।

“ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল বা তৃতীয় দিনও শহরের বিভিন্ন জায়গায় পশু কোরবানি হতে পারে। সেসব বর্জ্য তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে,”  বলেন মেয়র।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানান, ডিএসসিসির ১৩০টি খোলা ট্রাক, ৩৭০টি কনটেইনার, ৮৫টি কনটেইনার মুভার, ৬৫টি ডাম্প ট্রাক, ১৫টি পেলোডার, ১০টি টায়ারলোডার, ৯টি স্কিড লোডার এবং ১২টি পানির গাড়ি নগরকে সাফ করার কাজে রয়েছে।

তিনি বলেন, “যেসব বাজারে আগে কোরবানির পশু বিক্রি শেষ হয়েছে, সেখানে আমরা গত রাত থেকেই পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে দিয়েছি। কয়েকটি বাজারে আজ সকালেও বিক্রি হয়েছে; সেগুলোর কাজ আজ শুরু হয়ে যাচ্ছে।”

উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এম এ রাজ্জাক বলেন, সকাল থেকে ২৫, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকা ঘুরে ‘আশাব্যঞ্জক চিত্র’ দেখেছেন তারা।

“দেখেছি নাগরিকরা নিজ উদ্যোগে বর্জ্য অপসারণ করে ভ্যানে তুলে দিয়েছে। কিছু এলাকা প্রায় পরিষ্কার হয়ে গেছে।”

উত্তর সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ডাম্প ট্রাক, পাঁচটি অঞ্চলে পাঁচটি পানির গাড়িসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রয়েছে। ছোট-বড় ৩৫০টি গাড়ি ময়লা অপসারণের কাজে নিয়েজিত আছে বলে জানান রাজ্জাক।

ঈদের দিন দুপুরে সরেজমিনে বারিধারা, শাহজাদপুর, বাড্ডা, মহাখালী, খিলক্ষেত, উত্তরা ১২ নম্বর, ১৩ নম্বর ও ৩ নম্বর সেক্টর ঘুরে দেখা যায়, বিকাল ৩টার মধ্যেই অনেক এলাকার বর্জ্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

উত্তরার তিনটি সেক্টর ঘুরে বিকালে হতেগোনা দুই একটি বাড়ির সামনে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

শাহজাদপুর ও বাড্ডা এলাকায় কিছু কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হলেও বিকাল পর্যন্ত অনেক স্থানে রাস্তার পাশে ময়লা জমে থাকতে দেখা যায়।