রোববার নাজিম উদ্দিন রোডের বিশেষ এজলাসে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন কারাবন্দি এই আসামির সাফাই সাক্ষ্য নেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান আসামি জাহাঙ্গীরকে জেরা করেন। কিন্তু তা শেষ না হওয়ায় সোমবার পর্যন্ত মামলার পরবর্তী জেরার দিন ঠিক করেন বিচারক।
জাহাঙ্গীর আলমের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর তার বাবা আবুল কাশেম ছেলের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেবেন বলে জানান মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ।
এ নিয়ে মামলা দুটিতে আসামি পক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থনে জমা দেওয়া ২০ জনের সাফাই সাক্ষীর তালিকার মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হল বলে জানান ট্রাইবুনালের সাঁটলিপিকার ওয়ালিউল ইসলাম বাদল।
রোববার মামলার ১৯ আসামির মধ্যে ১৭ জনকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। দুজন অসুস্থ থাকায় তাদের ডাণ্ডাবেড়ি ছাড়া আদালতে আনা হয়।
এর আগে মামলার আসামি হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ১৯ সদস্যকে ডাণ্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে কারাগার থেকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষের করা একটি আবেদনেগত ২৪ অগাস্ট বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ আদেশ দেন।
একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা ১৩ বছর পর বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
মামলায় গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি হয়। এতে কারাবন্দি ৩১ আসামির সবাই নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ আসামি পালিয়ে থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।
মামলার আসামিদের মধ্যে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী, সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন, মুন্সি আতিকুর রহমান ও আব্দুর রশীদ এবং সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে আছেন।
লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং তারেক রহমানসহ ১৯ জন পালিয়ে আছেন।
এ মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নান ও জামায়াত ইসলামী নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়।
হামলায় আওয়ামী লীগের তখনকার মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হন।
সন্ত্রাসবিরোধী ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্র গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।
এ ঘটনায় পরদিন মতিঝিল থানার এসআই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এই মামলাটির তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ উঠে, যা পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।