মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
গত ৩ জুলাই সকালে রাজধানীর শ্যামলীর বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর ফরিদা আখতার তার স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ এনে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন, পরে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এর মধ্যেই ১৮ ঘণ্টা পর গভীর রাতে নাটকীয়ভাবে যশোরে বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে র্যাব-পুলিশ। র্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, অপহরণের কোনো নজির তারা পাননি।
পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও বলেন, ফরহাদ মজহার নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন। তবে ফরহাদ মজহার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে অপহরণের কথাই বলেন।
এদিকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে। প্রতিবেদন দিতে গোয়েন্দা পুলিশকে ১০ সেপ্টেম্বর সময় দেয় আদালত।
তদন্তের অবস্থা জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেব।”
অভিযোগের সত্যতা না মিললে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে থাকে।
তদন্তে কী পেয়েছেন- জানতে চাইলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বাতেন বলেন, “আগে যা পেয়েছি তাই, ভুয়া। ফলো আপ করার মতো কিছু নেই। মামলা খুব দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেব।”
মিথ্যা অভিযোগ করার ক্ষেত্রে পেনাল কোডের (দণ্ডবিধি) ২১১ ধারায় অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সেক্ষেত্রে ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না- জানতে চাইলে বাতেন বুধবার বলেন, “দেখি কী করা যায়।”
পুলিশের এই পদক্ষেপের বিষয়ে ফরহাদ মজহারের পরিবারের অবস্থান জানতে নানাভাবে চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার আদালতে জবানবন্দিতে বলেছিলেন, তাকে অপহরণ করে খুলনায় নেওয়া হয়েছিল। অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
ডানপন্থি এই অধিকারকর্মীর অন্তর্ধান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সব মহলে আলোচনার মধ্যে ‘তদন্তের সূত্র ধরে’ গত ১০ জুলাই ঢাকার আদালতে অর্চনা রানি নামে এক নারীকে হাজির করে পুলিশ।
নিজেকে ফরহাদ মজহারের শিষ্য দাবি করে এই নারী জবানবন্দিতে বলেন, সেদিন ফরহাদ মজহার তার জন্য অর্থ জোগাড় করতেই বেরিয়েছিলেন এবং ১৫ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন।
খুলনায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টের দোকানে ফরহাদ মজহারে যাওয়ার এবং ওই এলাকায় তার একাকী ঘোরাফেরার ভিডিও দৃশ্যও সাংবাদিকদের সরবরাহ করে পুলিশ।