‘তারেক-মিশুকের অন্তর্ধান চলচ্চিত্র আন্দোলনে বড় ধাক্কা’

চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক-চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরের প্রয়াণে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলন ‘বড় ধাক্কা’ খেয়েছে বলে মন্তব্য করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2017, 03:31 PM
Updated : 13 August 2017, 03:31 PM

তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের প্রয়াণের ছয় বছর পূর্তিতে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি ও তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট রোববার বিকালে শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করে স্মৃতিতর্পণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও তারেক মাসুদ স্মারক বক্তৃতা-২০১৭।

২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট মানিকগঞ্জের জোকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরের সঙ্গে প্রাণ হারান ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো তিনজন।

তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর স্মরণে স্মৃতিতর্পণ উপলক্ষে অংশ নেন রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, শিল্পী ঢালী আল মামুন, মিশুক মুনীরের ভাই আসিফ মুনীর, চলচ্চিত্রকার সাজেদুল আওয়াল, নাদির জুনাইদ।

স্মৃতিতর্পণ ও স্মারক বক্তৃতা আয়োজনে প্রারম্ভিক আলোচনা করেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ ও ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন।  আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের সভাপতি লাইলুন নাহার স্বেমি।

নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, “জহির রায়হানের পর তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের অন্তর্ধান চলচ্চিত্র আন্দোলনের জন্য বড় ধাক্কা। কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েও তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের অকাল প্রয়াণ নিয়ে বিশ্ব চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের শোকার্ত হতে দেখেছি। যেন বড় এক পরিবারের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।”

মেধা, সৃষ্টি ও নির্মাণের দিক থেকে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর ‘মানিকজোড়’ ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  দেশীয় চলচ্চিত্রের অধঃপতন রুখতে তারা বড় অবদান রাখতে পারতেন বলেও মনে করেন তিনি।

আসিফ মুনীর বলেন, ‘আদম সুরত’ সিনেমাটির নির্মাণপ্রক্রিয়ায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল।

“মিশুক ভাই ও তারেক ভাই দুজনেই দুজনের মানিকজোড় ছিলেন। মিশুক ভাই দেশের বাইরে থেকে যখন দেশে আসতেন, তখন মূল পরিকল্পনা করতেন তারেক ভাইয়ের সাথে।”

মানিকগঞ্জের সেই দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরদের গাড়িতে ছিলেন শিল্পী ঢালী আল মামুনও। গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি।

তিনি দুজনকে নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘মুক্তির গান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকে নতুন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ।

পরে ‘তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র ও তারেক মাসুদ পাঠ এবং পুনঃপাঠ’ শিরোনামে ‘তারেক মাসুদ স্মারক বক্তৃতা’ দেন চলচ্চিত্রকার প্রসূন রহমান।

স্মৃতিতর্পণ পর্বের আগে প্রদর্শিত হয় তারেক মাসুদের প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’। তারপর তারেক মাসুদের জীবন নিয়ে প্রসূন রহমান নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘ফেরা’ প্রদর্শিত হয়। পরে প্রসূন নির্মিত ‘আগস্টের আরিচা রোড’ শিরোনামে একটি গানে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করা হয় সেদিনের নিহতদের উদ্দেশ্যে।