রায়ে বিস্মিত বিশ্বজিতের পরিবার

বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আট আসামির ছয়জনই আপিলে রেহাই পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিশ্বজিৎ দাসের পরিবার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2017, 01:01 PM
Updated : 6 August 2017, 05:30 PM

রোববার হাই কোর্ট আপিলের রায় ঘোষণার পর বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত কুমার দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কী যে দুঃখ পেয়েছি, তা বলার মতো না।”

“আটজন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামির মধ্যে দুজন খালাস পেল! তা কী করে হয়,” প্রশ্ন তার ভাই উত্তম কুমার দাসের।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেস্বর গ্রামের তরুণ বিশ্বজিৎ পুরান ঢাকার শাখারী বাজারে একটি দরজি দোকানে কাজ করতেন।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধের মধ্যে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে ছাত্রলীগের একটি মিছিল থেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়।

আলোচিত এই ঘটনার রায়ে আটজনকে ফাঁসি এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল।

তার আপিলের রায় রোববার দিয়েছে হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দুজনকে খালাস দিয়েছে, চারজনের সাজা কমিয়ে দিয়েছে যাবজ্জীবন। মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে এখন শুধু দুজনের।

বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে যে দুজন আপিল করেছিলেন, তারা হাই কোর্টে খালাস পেয়েছেন। পলাতক থাকা বাকি ১১ জনের আগের সাজাই থাকছে।

এই হামলায় মৃত্যু ঘটে বিশ্বজিতের

রোববার আপিলের রায় শুনতে ভোজেশ্বর গ্রামে সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে ছিল বিশ্বজিতের পরিবার। তাদের সঙ্গে ছিল পাড়া প্রতিবেশী ও স্বজনরা।

দুপুরে রায় শুনে সবাই হতাশ হয়ে পড়েন। বিশ্বজিতের মা কল্পনা রানী দাস ও বাবা অনন্ত দাস কান্নায় ভেঙে পড়েন।

অনন্ত দাস বলেন, “সারাদিন না খেয়ে অপেক্ষায় ছিলাম রায় শোনার জন্য। কিন্তু এই রায় শুনে খাব কী করে? সরকারের কাছে আবেদন, যেন নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকে।”

কল্পনা দাস বলেন, “উচ্চ আদালতের রায়ে আমরা খুশি হতে পারিনি। আগের রায়ই বহাল হোক।আমার বিশ্বজিতকে যারা প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তির রায় আমি যেন দেখে যেতে পারি।”

রায়ে এক বিন্দুও খুশি না বলে জানান বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম দাস।

“সবাই আশা দিয়েছিল যে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে, তা উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে। কিন্তু এখন কী থেকে কী রায় আসল!”