মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াউদ্দিন মারা গেছেন

একাত্তরে সুন্দরব্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন।

পিরোজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2017, 07:56 AM
Updated : 28 July 2017, 04:47 PM

শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয় বলে তার ভাগ্নে শাহানুর রহমান শামীম জানান।

শামীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে তার মামা লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন। প্রায়ই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

সর্বশেষ গত ১ জুলাই অসুস্থ হওয়ার পর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৬৯ সালে। মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে একজন সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তিনি।

কর্নেল তাহেরের অনুসারী মেজর জিয়াউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর সুন্দরবনে আশ্রয় নেন। পরে সুন্দরবনে সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার হন তিনি।

সামরিক আদালতে বিচারের নামে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পাশাপাশি জিয়াউদ্দিনকেও ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পান তিনি।

আশির দশকে এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় বেশ কিছুদিন সিঙ্গাপুরে ছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা। পরে দেশে নিজের এলাকায় ফিরে শুরু করেন শুঁটকির ব্যবসা। ১৯৮৯ সালে তিনি পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ

একাত্তরে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখতে নেতৃত্ব দেওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা পরে ‘সুন্দরবন বাঁচাও’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন তোলেন। স্থানীয়ভাবে তাকে ডাকা হতো সুন্দরবনের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ নামে।

মৎস্যজীবীদের সংগঠন দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন সুন্দরবন এলাকায় ডাকাত নির্মূল অভিযানেও সক্রিয় ছিলেন। ২০১৩ সালে বনদস্যুদের গুলিতে তিনি আহত হন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সুন্দরবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তিনি ‌‘সুন্দরবন সমরে ও সুষমায়’  নামে একটি বইও লিখেছেন।