ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছে পুলিশ

ফরহাদ মজহার নিরুদ্দেশ হওয়ার ঘটনা নিয়ে জবানবন্দিতে অপহরণের মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2017, 09:39 AM
Updated : 18 July 2017, 09:56 AM

মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফরহাদকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপি যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে যে তথ্য এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে তিনি অপহৃত হননি। ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং সেই সঙ্গে উনার কার্যকলাপ ও আমাদের কাছে থাকা তথ্যের মধ্যে কোনো মিল নাই। এই বিষয়টি উনার মাধ্যমে যাচাই করা হবে।

“তিনি যদি সত্যিকার অর্থে অপহৃত হয়ে থাকেন, তাহলে একমাত্র সাক্ষী তিনি নিজেই এবং যারা অপহরণ করেছে তারা। এই পর্যন্ত তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে, তিনি অপহৃত হননি।”

এবিষয়ে পুলিশের পরবর্তী করণীয় জানতে চাইলে বাতেন বলেন, কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে, মিথ্যা অভিযোগে মামলা করলে পেনাল কোডের (দণ্ডবিধি) ২১১ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রয়েছে।

“সব প্রক্রিয়া যাচাই করে দেখে আইনগতভাবে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা দেখা হবে।’

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কবি ও লেখক ফরহাদকে শ্যামলীর হক গার্ডেনের বাসা থেকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জবানবন্দি ও তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের মধ্যে ‘গরমিলের’ বিষয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

গত ৩ জুলাই সকালে নিখোঁজ হওয়ার ১৮ ঘণ্টা পর নাটকীয়ভাবে যশোরে বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে র‌্যাব-পুলিশ।  পরদিন সকালে ডিবি কার্যালয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঢাকার আদালতে নেওয়া হয়।

সেখানে জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তাকে অপহরণ করে খুলনায় নেওয়া হয়েছিল। অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল।

এই অন্তর্ধান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সব মহলে আলোচনার মধ্যে ‘তদন্তের সূত্র ধরে’ গত ১০ জুলাই ঢাকার আদালতে অর্চনা রানি নামে এক নারীকে নিয়ে আসে পুলিশ।

নিজেকে ফরহাদ মজহারের শিষ্য দাবি করে এই নারী জবানবন্দিতে বলেন, সেদিন ফরহাদ মজহার তার জন্য অর্থ জোগাড় করতেই বেরিয়েছিলেন এবং ১৫ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন।

১৩ জুলাই পুলিশ মহা পরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তদন্তে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের মনে হয়েছে, ফরহাদ মজহার স্বেচ্ছায় খুলনা গিয়েছিলেন, অপহরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনার দিন কয়েকবারের টেলিফোন কথোপকথনের এক পর্যায়ে ফরহাদ মজহার তার স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ‘অপহরণের কথা বলতে মানা করেন’ বলেও দাবি করেন আইজিপি।

বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর কয়েকদিন আগে ফরহাদকে তার বাসায় নেওয়া হয়।