না জানিয়ে ইসিতে রদবদলে ‘বিস্মিত’ মাহবুব

না জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের একদল মাঠ কর্মকর্তাকে রদবদলে বিস্ময় প্রকাশ করে সচিবের কাছে ‘আনঅফিসিয়াল নোট’ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2017, 08:13 PM
Updated : 12 July 2017, 08:19 PM

সম্প্রতি গঠিত কমিশনের নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাহবুব জানতে চেয়েছেন কর্মকর্তাদের রদবদলের বিষয়টি তার কার্যপরিধির আওতায় পড়ে কি না।

রোববার এক প্রজ্ঞাপনে কমিশন সচিবালয়ের মাঠ পর্যায়ের ১০টি শীর্ষ পদে রদবদল আনা হয়। সারাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরও পরিবর্তন করা হয়।

এ নিয়ে সোমবার ইসি সচিবকে ইউও নোটে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব লেখেন, “বিষয়টি আমাকে কিছুটা বিস্মিত করেছে।কারণ কোনো পর্যায়েই আমাকে তা অবহিত করা হয়নি।”

তিনটি বিষয় জানতে চেয়ে তিনি লেখেন, “নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটি নামে ১২ জুন যে কমিটি গঠিত হয়েছে, এ বদলি-পদোন্নতি তার কার্যপরিধির আওতায় পড়ে কি না; এ কমিটির সভায় তা আলোচিত হওয়া উচিত ছিল কি না ও কমিটিকে অবহিত করা না হলে কমিটির আবশ্যকতা থাকে বলে প্রতীয়মান হয় না;  কোন নিয়মনীতি অনুসরণ করে তা করা হয়েছে।”

পাশাপাশি এ সম্পর্কে যাবতীয় নির্দেশ, আদেশ ও অন্যান্য নথিপত্র তার কাছে দ্রুত পেশ করার পরামর্শ দেন মাহবুব তালুকদার।

ওই নোটের পরিপ্রেক্ষিতে ইসি সচিব ও অতিরিক্ত সচিব বুধবার এই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন শপথ নেয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি, এই কমিশনের অধীনেই একাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাঠ কর্মকর্তাদের বদলি-পদোন্নতির পর স্যার ইউও নোট দিয়েছেন। এটা নিয়ে সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আজ কথা হয়েছে, তাকে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি, এখন আর এ নিয়ে কোনো অসুবিধা হবে না।”

ইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইসি সচিবালয়ের প্রশাসনিক বদলির এ কার্যক্রম একজন নির্বাচন কমিশনারের কার্যপরিধির আওতায় পড়ে না। তারপরও কমিটির মাধ্যমে তাকে সুপারিশ করা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

ইসি কর্মকর্তারা একথা বললেও সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন মনে করছেন, ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পাঁচ সদস্যের এই ইসি গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় এ ধরনের আলোচনা কমিশনকে নিয়ে জনগণের কাছে ‘ভুল বার্তা’ দেবে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে যেহেতু একটি কমিটি করা হয়েছে, সেহেতু রদবদলের বিষয়টি তাকে অবহিত করাটাই উচিত ছিল। নির্বাচন কমিশন একটি একক সত্তা, সব সদস্য মিলেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

“এখানে একটি ভুল নিয়ে অন্যকে সুযোগ দেওয়ার অবকাশ নেই, এতে কমিশন সম্পর্কে জনগণ ভুলবার্তা পাবে।”