হালনাগাদ: ভোট সামনে রেখে সাড়া পাওয়ার আশায় ইসি

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাদপড়া ও নতুন ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার আশা করছে নির্বাচন কমিশন-ইসি।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2017, 06:52 AM
Updated : 8 July 2017, 06:52 AM

দুই বছর আগে নিবন্ধন তথ্য নিতে গিয়ে কম বয়সীদের অনাগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি। সেই সঙ্গে নারী ভোটারদের অনীহা ও মৃতদের বাদ দেওয়ার কাজেও সফলতা পায়নি সংস্থাটি।

এ অবস্থায় নতুন হালনাগাদে ব্যাপক সাড়া পেতে মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকায় ভোটার হতে নাগরিকদের আগ্রহও বেড়েছে। পাশাপাশি একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার যোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও বিশেষ নজর থাকবে।

ভোটার হতে সচেতনতার পাশাপাশি ইসির প্রচারণা ও বাড়ি বাড়ি যেতে তথ্যসংগ্রহকারীদের গাফিলতি না থাকলে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।

২০১৫ সালে একসঙ্গে তিন বয়সীদের (বর্তমানে যাদের বয়স ১৫-১৭ বছর) তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওই সময় প্রায় ৭২ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা পূরণ করতে পারেনি কমিশন।

ভরা বর্ষায় হালনাগাদের কাজ চলায় অনেক এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি না যাওয়ার অভিযোগ ছিল।

এবার আগামী ২৫ জুলাই থেকে সব উপজেলায় হালনাগাদ কার্যক্রম শুরুর কথা রয়েছে। ওইদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ময়নমসিংহে হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, এবার একযোগে সব উপজেলায় ২৫ জুলাই থেকে ৯ অগাস্ট পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ চলবে। এই হালনাগাদে প্রায় ৩৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে এবং যেসব নাগরিক যোগ্য হওয়ার পরও বিভিন্ন কারণে ভোটার হতে পারেননি কেবল তাদের ভোটার করা হবে। এ সময় মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে ও ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও নেওয়া হবে।

(ফাইল ছবি)

২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

সচিব বলেন, “নারী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। সেই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি বিভাগ-সংস্থাকে কাজে লাগানো হবে। মৃতদের নাম বাদ দিতে বিশেষ নজর থাকবে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ কমিটির মাধ্যমে যোগ্যদের ভোটার করা হবে।”

বাংলাদেশের মোট ১০ কোটি ১৮ লাখের বেশি ভোটারের মধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। এ অনুপাত ৫১:৪৯।

তবে সর্বশেষ হালনাগাদে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটার প্রায় ৬ শতাংশ কম। হালনাগাদের পর নারী-পুরুষের ব্যবধানও কমে আসবে বলে ধারণা করছেন ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

‘বাড়ি বাড়ি না গেলে ব্যবস্থা’

তথ্য সংগ্রকারীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

বুধবার এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “ইউনিয়ন কাউন্সিল বা কোনো দলের পার্টি অফিসে বসে ভোটার তালিকার হালনাগাদের কাজ করা যাবে না। তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। কেউ এর ব্যত্যয় করতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি জানান, গত বছর হালনাগাদে কিছু ভোটার বাদ পড়েছে, নারী ভোটার কিছুটা কম হয়েছে এবং মৃত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি- এমন কথা উঠেছে।

“এটা আমরাও মনে করছি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে করা ভোটার তালিকাটা যেন নির্ভুল থাকে। সামনেই আমাদের নির্বাচন, আমরা চাচ্ছি- ভোটার তালিকা যেটা আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন না থাকে।”

রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশের নাগরিক নয়- এমন কেউ যেন ভোটার হতে না পারে সে দিকে সজাগ থাকার কথাও বলেন তিনি।